জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মন্ত্রী গৌতম দেব এবং সৌরভ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
হস্তক্ষেপ করলেন মন্ত্রী। তবুও অস্থিরতা কাটল না জলপাইগুড়ি় সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।
তিনদিন ধরে চলা অচলাবস্থা কাটাতে রবিবার সেখানকার ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব৷ কখনও সেই আলোচনা হয় সার্কিট হাউজে, তো কখনও মন্ত্রী ছুটে যান কলেজ ক্যাম্পাসে৷ আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তেরও আশ্বাস দেন৷ কিন্তু অধ্যাপক দীপককুমার কোলেকে না সরানো পর্যন্ত নিজেদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা মন্ত্রীকে সাফ জানিয়ে দেন ছাত্ররা৷
প্রশাসন র্যাগিং নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে। অভিযুক্ত ২৪ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এই ছাত্রদের বেশিরভাগই দ্বিতীয় বর্ষের। তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ছাত্রও রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি সহ মারধর ও একাধিক ধারা রয়েছে। রাজ্যের র্যাগিং বিরোধী আইনও দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে গোলমাল শুরু হয় জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে৷ প্রথমে মনে করা হয়েছিল প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্রের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘিরেই এই গোলমাল৷ কিন্তু শনিবার প্রথম বর্ষের এক ছাত্র হস্টেল থেকে পালিয়ে এসে অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার তার ওপর র্যাগিং করেছিল সিনিয়র ছাত্ররা৷ তাদের বাধা দেন অধ্যাপক দীপককুমার কোলে।
শুক্রবার সকাল থেকে দীপকবাবুর অপসারণ দাবি করে আন্দোলন শুরু করেন দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্ররা৷ র্যাগিং ধামাচাপা দিতেই ওই আন্দোলন বলে অভিযোগ করেন প্রথম বর্ষের ছাত্ররা। জট কাটাতে রবিবার আসরে নামেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব৷ এ দিন সকালে প্রথমে সার্কিট হাউজে র্যাগিং-এর অভিযোগ তোলা প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি৷ তারপর আলোচনা করেন অধ্যাপকদের সঙ্গে ৷ দুপুরে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে নিয়ে কলেজে যান তিনি৷ সঙ্গে ছিলেন এসজেডির-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীও।
আন্দোলনকারী ছাত্রদের মন্ত্রী জানান তাঁর সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কথা হয়েছে৷ তাঁদের যা যা অভিযোগ রয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে৷ কিন্তু তাঁরা যেন অনশন-আন্দোলন তুলে নেন৷ কিন্তু দীপকবাবুকে অপসার়িত না করা পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন৷ পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ছাত্রদের অনুরোধ করেছি৷ এ বার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ওরা ঠিক করুক কী করবে৷’’
মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় এ দিন অধ্যাপকরাও বুঝিয়ে দেন যে তাঁরা দীপকবাবুর পাশেই রয়েছেন৷ একইসঙ্গে কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনারও দাবি তোলেন তাঁরা৷ তার আগে প্রথম বর্ষের ছাত্ররা পর্যটনমন্ত্রীকে জানান, কীভাবে তাঁদের উপর র্যাগিং করেছিল সিনিয়র ছাত্ররা৷
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘প্রথম বর্ষের ছাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। তদন্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy