Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

আস্থা নেই মিত্রে, আদালত, পুরসভার রায়ে হারলেন প্রশান্ত

পুরসভার ১৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জন তৃণমূল কাউন্সিলর প্রশান্তর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর নিজের দিকে না থাকায় অনাস্থা আটকাতে প্রশান্ত প্রথমে হাইকোর্টে যান।

বাড়িতে প্রশান্ত মিত্র। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে প্রশান্ত মিত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েও শেষরক্ষা হল না। আদালতের ধাক্কার সঙ্গে শাসক দলের সংখ্যার জোরেই অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন গঙ্গারামপুরের পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্র। ৪২ দিনের টানাপড়েনের শেষে সোমবার ভোটের মাধ্যমেই পুরসভা পুরো দখলে এল তৃণমূলের। সেই সঙ্গে শাসক শিবিরের এ দিনের বাড়তি পাওনা, বিজেপির এক কাউন্সিলরের সমর্থন। খুব শীঘ্রই তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলেও খবর।

এ দিনের জয়ের মূল কারিগর, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘এই জয় ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমাদের পাশে কাউন্সিলররা ছিলেন। ওদের কাছে কাউন্সিলর ছিল না। তাই পরাজয় আটকাতে কোর্টে যেতে হয়েছিল। কিন্তু কোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে। আমরা বিনা আইনি জটিলতায় জয়ী হয়েছি।’’ অন্য দিকে সদ্য-অপসারিত পুরপ্রধান প্রশান্ত বলেন, ‘‘প্রশাসন দিয়ে জোর করে ভোট করা হল। সমস্ত কাউন্সিলরকে বন্দি করে, ভয় দেখিয়ে যদি ভোট করাতে বাধ্য না করা হত, তা হলে ওদের অনেকেই আমাকে সমর্থন করতেন। এখনও চিঠি পাইনি। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেব। প্রয়োজনে আবার কোর্টে যাব। তা না হলে সাধারণ কাউন্সিলর হিসেবেই পুরসভায় যাব।’’

পুরসভার ১৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জন তৃণমূল কাউন্সিলর প্রশান্তর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর নিজের দিকে না থাকায় অনাস্থা আটকাতে প্রশান্ত প্রথমে হাইকোর্টে যান। পাল্টা তৃণমূলও হাইকোর্টে যায়। হাইকোর্ট এ দিন, সোমবারই আস্থাভোট করতে বলে। পরে সিঙ্গল বেঞ্চের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান প্রশান্ত, এবং আর্জি জানান এ দিনের আস্থা ভোট যেন স্থগিত করা হয়। প্রশান্ত শিবির সূত্রে খবর, প্রয়োজনীয় কাউন্সিলর হাতে ছিল না তাদের। বেঞ্চ এ দিন সেই আবেদন খারিজ করেছে। বেঞ্চ জানিয়েছে, গণতন্ত্র সংখ্যাগিষ্ঠতাকে প্রাধান্য দেয়। গণতন্ত্রের স্বার্থেই পুরপ্রধানের অনাস্থা ভোটে যোগ দেওয়া উচিত। এ দিনের অনাস্থায় প্রশান্ত যোগ না দিলেও তাঁর অনুপস্থিতিতেই তাঁকে সরিয়ে দেন সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল কাউন্সিলররা। মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ায় নিজের পরাজয় রোখার আর কোনও রাস্তাই ছিল না প্রশান্তর হাতে। সূত্রের খবর, পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই তিনি ও তাঁর অনুগামী কাউন্সিলররা এ দিন পুরসভায় যাননি। এ দিকে, তৃণমূল শিবির ১০ জন কাউন্সিলর নিয়ে সকাল ১০টার আগেই পুরসভায় পৌঁছে যায়। কিছু ক্ষণ পরে বিজেপির একমাত্র কাউন্সিলর অশোক বর্ধনও পুরসভায় এসে পড়েন। তারপরেই ওই ১১ জন কাউন্সিলর প্রশান্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ করেন। প্রশান্ত শিবিরের খবর, এ দিন তিনি বাড়িতেই ছিলেন।

অশোক আস্থা ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন করায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অশোক বলেন, ‘‘আমি বিজেপির জেলা সভাপতির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই তৃণমূলকে সমর্থন করেছি। ভবিষ্যতে আবার তৃণমূলেও যেতে পারি।’’ এই ঘটনার পরে বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর। বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার বলেন, ‘‘উনি দল-বিরোধী কাজ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

No confidence vote Gangarampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy