Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Plus Yojana

চাটাইয়ের উপরে টালির ছাউনি দেওয়া ঝুপড়ি বাড়ি, তবু প্রধান নাম কাটালেন আবাস যোজনা থেকে

‘আবাস প্লাস’ প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ায় প্রধানের সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রশাসন থেকে শুরু করে বিরোধী দলের সদস্যও। কেন নিলেন না সরকারি ঘর?

চাটাইয়ের বাড়িতে প্রধান রাখি রায়।

চাটাইয়ের বাড়িতে প্রধান রাখি রায়। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৪
Share: Save:

চাটাইয়ের উপরে টালির ছাউনি দেওয়া ঝুপড়ি বাড়ি। ‘সে’ বাড়ির মালিকের নাম রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকাতেও। তবুও সরকারি ঘরের তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন উপভোক্তা নিজে। ইংরেজবাজার ব্লকের শোভানগর পঞ্চায়েত প্রধান রাখি রায় উপপ্রধানও ছিলেন পঞ্চায়েতের। তাঁর স্বামী মানিক রায় পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তার পরেও তালিকা থেকে নিজের নাম বাদ দেওয়ায় প্রধানের সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রশাসন থেকে শুরু করে বিরোধী দলের সদস্যও।

প্রশাসনের দাবি, ‘আবাস প্লাস’ প্রকল্পের উপভোক্তা যাচাইয়ে জেলায় এক লক্ষ ৬৭ হাজারের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার নাম বাদ গিয়েছে। সে তালিকায় পাকা বাড়ির মালিক থেকে ঢালাও হারে রয়েছে জনপ্রতিনিধির নাম। ইংরেজবাজার ব্লকের শোভানগর পঞ্চায়েতেও ১,৮০০ উপভোক্তার মধ্যে ৪০০ জনের নাম বাদ গিয়েছে। অভিযোগ, পাকা বাড়ি থাকলেও তাঁদের নাম সরকারি ঘরের তালিকায় ছিল। স্থানীয়দের দাবি, ঝুপড়ি বাড়ি থাকলেও ঘর প্রকল্প থেকে রাখির নাম বাদ গিয়েছে।

কেন নিলেন না সরকারি ঘর? কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া রাখি রায় বলেন, “আমার সংসদে ১,৬০০ ভোটার রয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই দিনমজুর। অনেকের পাকা ঘর নেই। তালিকায় সবার নামও নেই। প্রধান হয়ে পাকা ঘর নেব, আর গ্রামবাসীরা কাঁচা বাড়িতে থাকবেন, তা কী করে হয়! তাই নিজের নাম বাদ দিয়েছি।” তালিকায় নাম উঠেছিল কেন? তিনি বলেন, “২০০৮ সালে উপপ্রধান হয়েছি। ২০১৮ সাল থেকে প্রধান। সেই সময়, আমার বাড়ি দেখে ব্লক প্রশাসনের কর্তারাই ঘরের তালিকায় নাম দিয়েছিলেন।”

রাখির স্বামী মানিক রায় ২০০৩ সালে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সদস্য হন। পরে, তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁর স্ত্রী দু’বার কংগ্রেসের টিকিটেই জয়ী হয়ে উপপ্রধান, প্রধান হন। এ বার বিধানসভা ভোটের পরে, তৃণমূলে যোগ দেন তাঁরা। তিনি গৃহশিক্ষকতা করেন। বেসরকারি নার্সারি স্কুলের শিক্ষকও ছিলেন। তবে লকডাউনের সময় থেকে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, “মরসুমে আমের ব্যবসা করি। এই ভাবেই তিন ছেলে-মেয়ে পড়াশোনার খরচ, সংসার সবই চালাচ্ছে হচ্ছে। তবে, মানুষকে ঠকিয়ে কিছু করতে চাই না। তাই ঘরের তালিকা থেকে নিজেদের নাম বাতিলের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।”

গ্রামবাসী কিয়ামত আলি বলেন, “প্রধান ও তাঁর স্বামীকে আমরা ভাল বলেই চিনি। মানুষের পাশে থাকেন।” প্রশংসা করেছেন পঞ্চায়েতের বিরোধী নেত্রী কংগ্রেসের সাকিলা বিবি। তিনি বলেন, “রাখি কংগ্রেস থেকে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়ে আমাকে উপপ্রধানের পদ থেকে সরিয়েছেন। তবুও বলব প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই। উপভোক্তা হিসেবে প্রধান ঘর পাওয়ার যোগ্য।” ইংরেজবাজারের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, “সমীক্ষার সময় তালিকা থেকে নাম বাতিলের জন্য প্রধান নিজেই আবেদন করেছিলেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Plus Yojana Maldah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy