Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Tiger Hill

টাইগার হিলে নির্মাণ, ‘দূষণে’ ক্ষোভ  

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে টাইগার হিলে ক্রমাগত বাড়তে থাকা প্লাস্টিক দূষণ, একের পরে এক মোবাইল টাওয়ার এবং অস্থায়ী নির্মাণ শুরু হয়েছে ‘সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট’ ঘিরেও।

ভিউ পয়েন্টের পাসেই বাড়ছে অস্থায়ী নির্মাণ।

ভিউ পয়েন্টের পাসেই বাড়ছে অস্থায়ী নির্মাণ। —নিজস্ব চিত্র।

শান্তশ্রী মজুমদার
শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৪
Share: Save:

উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ, উত্তর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদের ঘটনাগুলি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল, পাহাড়ের উপরে অনিয়ন্ত্রিত জনগোষ্ঠীর চাপ কী ভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটাতে পারে। একই রকমের চাপ দার্জিলিংয়ের আরও উপরে টাইগার হিলেও বাড়ছে বলে অভিযোগ তুললেন পরিবেশবিদ তথা আইনজীবী সুভাষ দত্ত।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে টাইগার হিলে ক্রমাগত বাড়তে থাকা প্লাস্টিক দূষণ, একের পরে এক মোবাইল টাওয়ার এবং অস্থায়ী নির্মাণ শুরু হয়েছে ‘সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট’ ঘিরেও। অভিযোগ, সেখানে জীববৈচিত্রের ক্ষতি যেমন হচ্ছে, তেমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের রসদও জমছে।

দার্জিলিং শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে, সিঞ্চল বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যের ভিতরে প্রায় সাড়ে আট হাজার ফুট উঁচুতে টাইগার হিল। আশেপাশে বাস করে হিমালয়ের কালো ভাল্লুক, চিতাবাঘ, উড়ুক্কু কাঠবিড়ালি ছাড়াও হাজারো রকমের পাখি। সংরক্ষিত সেই বনাঞ্চলের ভিতরেই টাইগার হিলের ‘সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট’ ঘিরে ছড়াচ্ছে দূষণ। অভিযোগ, সেখানে প্লাস্টিক পড়ে থাকছে। প্লাস্টিক সেখানেই জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা পরিবেশের চূড়ান্ত ক্ষতি করছে বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। সুভাষ বলেন, ‘‘আমি টাইগার হিল গিয়ে অবাক হয়ে গিয়েছি। একের পরে এক মোবাইল টাওয়ার তৈরি হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ নেই। এলাকায় ইচ্ছে মতো অস্থায়ী নির্মাণ শুরু হয়ে গিয়েছে। এগুলি সবই পরিবেশ আদালতের নজরে আনব।’’

দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগের তরফে ২০২১ সালেই সিঞ্চল, টাইগার হিল এলাকাগুলি প্লাস্টিক-বর্জিত বলে বন দফতর। তার পরেও এলাকায় কী ভাবে প্লাস্টিক দূষণ ছড়াচ্ছে?

টাইগার হিলে আসা সব পর্যটকের কাছে যেতে বন দফতর মাথা পিছু টাকা নেয়। তবু কেন বিজ্ঞানসম্মত ভাবে জঞ্জাল অপসারণ ব্যবস্থাপনা নেই? দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও বিশ্বনাথ প্রতাপ বলেন, ‘‘আমরা শীঘ্রই এলাকায় জঞ্জাল অপসারণ ব্যবস্থা চালু করছি। টাইগার হিল থেকে গাড়ি পর্যটকদের গাড়ি অন্তত ৫০০-৬০০ মিটার দূরে রাখা যায় কি না, তা-ও কথা বলে দেখছি।’’

তবে এত দিন কেন এ সব হয়নি তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। প্রতিনিয়ত অন্তত ৬০০ পর্যটক ‘ভিউ পয়েন্ট’-এ আসেন। রয়েছে পিকনিক দল। পর্যটনের মরসুমে রোজ অন্তত দু’হাজার মানুষ যান। এলাকায় গাড়ির জ্বালানি থেকেও দূষণের পরিমাণ কিছু কম নয়। অনিয়ন্ত্রিত মানুষ নির্মাণের চাপ বেড়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিমের মতো পাহাড়ি শহরগুলিতে। টাইগার হিলও কি একই রাস্তায় হাঁটছে?

উত্তরাখণ্ডের যোশীমঠে ক্রমাগত বাড়তে থাকা মানুষের চাপই বিপর্যয় ডেকে এনেছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। পূর্ব হিমালয়ের মাথায় সংবেদনশীল এলাকায় এ সব একই রকম বিপর্যয় ডেকে আনবে না তো? জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর সোনম ভুটিয়া বলেন, ‘‘আমরা মাঝেমধ্যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাই। এলাকাটি বন দফতরের। মোবাইল টাওয়ার নিয়ে সঠিক তথ্য নেই আমাদের কাছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling tiger hill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy