আশঙ্কা শিলিগুড়িকে নিয়ে। —প্রতীকী চিত্র।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলছিলেন, ‘‘শহরে বায়ূ দূষণের জেরে বাচ্চারাও ফুসফুসের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে।’’ শহরের এক পরিবেশপ্রেমীর কথায়, ‘‘মাস কয়েক আগে দিল্লির এক পরিচিত বন্ধু এই শহরের দূষণ পরিস্থিতি জেনে ফোন করে বলছিল, কি রে, তোরা তো দেখছি দিল্লিকেও ছাড়িয়ে যাবি!’’
এমনই আশঙ্কা শিলিগুড়িকে নিয়ে। শহরে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধির হার এতটাই যে গাড়ির ধোঁয়া থেকে দূষণ চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া শহর লাগোয়া বৈকুন্ঠপুর এবং মহানন্দা অভয়ারণ্যে আগুন লাগা এবং লাগানোর ঘটনা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, পশুপালকদের দল অনেক সময় বনাঞ্চলে শুকনো ঘাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাতে পুড়ে যাওয়া অংশে দ্রুত নতুন ঘাস গজাবে বলে তাঁদের আশা। বনাঞ্চলে আগুনের ধোঁয়া থেকে মারাত্মক দূষণ ছড়ায়।
শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘দূষণ কমাতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। রাস্তা, উড়ালপুলে গাড়ি ঘুরিয়ে শহরের গতি বাড়ানো হচ্ছে। বনাঞ্চলে আগুন লাগার সম্ভাবনা কমাতে বন দফতর, দমকলকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তা ছাড়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বর্জ্য বিজ্ঞানসম্মত ভাবে নষ্ট করার প্রক্রিয়া চলছে।’’ তাঁর সংযোজন, সুখা মরসুমে রাস্তায় জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে ধূলো কম হয়।
পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, শিলিগুড়ি শহরের প্রধান রাস্তায় গাড়ির গতি ঘন্টায় ৫-১০ কিলোমিটার। গাড়ির গতি কম, যানজট যত হবে, গাড়ির তেল পুড়ে তত বেশি দূষণ ছড়াবে। সেটাও চিন্তার অন্যতম কারণ। গাড়ির চলাচল বেড়েছে ইস্টার্ন বাইপাসেও। ওই অংশে বাড়ছে বায়ূ দূষণও। শহরের এক দিকে ইস্টার্ন বাইপাসে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বর্জ্যে আগুন থেকে যে ধোঁয়া ছডায়, তা শিলিগুড়ি শহরে একটা বিপদের কারণ। সুখা মরসুমে তা বাড়ে। চাপা পড়ে থাকা বর্জ্যে মিথেন গ্যাস জ্বলে দূষণ ভয়ঙ্কর হয় বলে অভিযোগ।
পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘বন্ধুরা বলছিল, দিল্লির থেকেও বেশি দূষণ হচ্ছে শিলিগুড়িতে। শীতের দিনে কুয়াশার জন্য আরও বেশি দূষণ বাড়ে। কেন না, ওই সমস্ত সূক্ষ ধূলিকণা তার সঙ্গে মিশে ধোঁয়াশা তৈরি করে। যা শ্বাসকষ্ট বাড়ায়।’’
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শিলিগুড়ি অফিসের এক আধিকারিক জানান, নির্মাণকাজের জায়গাগুলিতে ধুলো রোখার জন্য জল দেওয়ার কথা জানানো হচ্ছে সংস্থাগুলোকে। পর্ষদের তরফে যা করণীয় তা করা হয়। তবে গাড়ি থেকে বা বনাঞ্চলে আগুন লেগে ধোঁয়ায় যে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, সে সব সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফেই দেখার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy