দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: বাড়িতে পড়ায় মগ্ন প্রীতি সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির চারপাশে বাঁশ বাগান। নিস্তব্ধ নির্জন পরিবেশ। পড়ার গুনগুন শব্দে ভাঙছে সকালের নিস্তব্ধতা। লোহার দরজা ঢেলে বাড়িতে ঢুকতেই দেখা গেল, বারান্দায় বসে পড়ায় মগ্ন এক কিশোরী। তারই বিয়ে উপলক্ষে মাত্র তিন মাস আগে সেজে উঠেছিল বাঁশ বাগান ঘেরা হবিবপুরের ঋষিপুর গ্রামপঞ্চায়েতের বুড়িতলা গ্রামের ছোট্ট পাকা বাড়িটি। পুলিশ ২৪ ঘণ্টা আগে গিয়ে বিয়ে রুখে দিয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণি পড়ুয়া প্রীতি সিংহের। দীর্ঘমাস পরে স্কুল খোলার তোড়জোড়ে ফের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে প্রীতি।
আইহো-ঋষিপুর রাজ্য সড়ক থেকে ভাঙাচোরা পথ পেরিয়ে বুড়িতলা গ্রাম। তিন কিলোমিটার দূরে ঋষিপুর হাই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে প্রীতি। বাবা সাধন সিংহ নিজের জমিতে চাষবাস করেন। দুই ভাই-বোনের মধ্যে প্রীতিই বড়। তিন মাস আগে মালদহ শহরের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় মেয়েটির। আশীর্বাদ থেকে শুরু করে বিয়ের আয়োজন সবই হয়ে গিয়েছিল। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে গিয়ে বিয়ে রুখেছে পুলিশ। নিজের ভুল বুঝতে পেরে মুচলেকা দেন মেয়ের পরিবার। ছাত্রীর মা পম্পা সিংহ বলেন, “ভাল সম্বন্ধ পেয়ে যাওয়ায় বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। আর তখন স্কুল বন্ধ ছিল। এখন আর বিয়ে দেব না। মেয়ে যত দূর পর্যন্ত পড়তে চাইবে পড়াব।”
পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় প্রীতিও। তার কথায়, “লকডাউনের মধ্যে অনেকের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেকেরই ঠিকানা এখন শ্বশুরবাড়ি। আমারও বিয়ে হয়ে গেল আর পড়া হত না।” ১৬ নভেম্বর খুলছে স্কুল। প্রীতি বলে, “মাধ্যমিকে অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে মন দিয়ে পড়াশোনা করে ভাল রেজাল্ট করতে চাই।” ঋষিপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ নন্দী বলেন, “স্কুল খোলা থাকলে মেয়েদের বিয়ের বিষয়ে জানতে পারি। তখন পুলিশের সহযোগিতায় মেয়েদের বিয়ে রুখে দেওয়া হয়। স্কুল খুললে বুঝতে পারব কত মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।” মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “লকডাউনের মধ্যে প্রচুর মেয়ের বিয়ে রোখা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy