স্কুলপড়ুয়া খুদেদের সঙ্গে সান্তার বেশে পুলিশকর্মী কিংশুক বর্মা। জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
লাল ঢোলা জোব্বার মতো পোশাক৷ লাল টুপি৷ সাদা দাড়ি৷ সকাল থেকেই রাস্তায় সান্তা ক্লজ৷ যেখানে কচি-কাচাদের পাচ্ছেন, সেখানেই তাদের সঙ্গে আনন্দে মিশে যাচ্ছেন৷ ঝোলা থেকে বের করে দিচ্ছেন উপহারও৷
বড়দিন কাছে আসতেই ঠিক এ ভাবেই জলপাইগুড়িতে আবির্ভাব হল সান্তা ক্লজের।
আসলে এই দিনটার জন্যই বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন পেশায় রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের কনস্টেবল কিংশুক বর্মা৷ প্রতি মাসে পাওয়া মাইনে থেকে কিছু টাকা আলাদাও করে রাখেন তিনি৷ যাতে বড়দিনের আগে ছোটদের জন্য উপহার কিনতে পারেন৷ আর বড়দিন কাছে আসতেই কাজের ফাঁকে নিজেই সান্তা সেজে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন কিংশুকবাবু৷ ছোটদের স্কুলের পাশাপাশি বিভিন্ন হোমে ও অনাথ আশ্রমে ঘুরে বেড়ান৷
শিলিগুড়ির শিব মন্দির এলাকার বাসিন্দা কিংশুকবাবু ১৯৯৬ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন৷ প্রথম পোস্টিং ছিল রায়গঞ্জে৷ সেখান থেকে ২০০৭ সালে জলপাইগুড়িতে বদলি হন৷ এক সময় শিলিগুড়ির বড় বড় ক্লাবে চুটিয়ে ফুটবলও খেলেছেন৷ কিংশুকবাবুর কথায়, “খেলার মাঠের সূত্রেই ছোট ছোট অনেক ছেলে-মেয়ের সঙ্গে রোজ দেখা হত৷ ওদের একটু আনন্দ দিতে পারলে খুব ভাল লাগত৷ আর সেই ভাল লাগা থেকেই বড়দিনের বিষয়টা আমার মাথায় আসে৷ রায়গঞ্জে চাকরি পাওয়ার পর থেকেই বড়দিনের আগে সান্তা ক্লজ সাজতে শুরু করি৷ জলপাইগুড়িতে এসেও তা করে যাচ্ছি৷”
শিবমন্দিরে কিংশুকবাবুর বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছেন৷ কিংশুকবাবুর কথায়, ‘‘আমার স্ত্রী-ও এ ব্যাপারে আমায় খুব উৎসাহ দেন৷ আর তাই প্রতি মাসে মাইনে পেলেই বড় দিনের উপহার কেনার জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রেখে দেই৷’’
বড়দিনের আগে সান্তা ক্লজকে পেয়ে খুশি জলপাইগুড়ির কচি-কাচারাও৷ পূর্বাঞ্চল হাই স্কুলের ছাত্রী রিম্পা রায় বা কল্যাণ বসাকদের কথায়, “সান্তা ক্লজের গল্প অনেক শুনেছি৷ কিন্তু এ দিন আচমকাই স্কুল যাওয়ার পথে তার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল৷ ঝোলা থেকে আমাদের চকলেট উপহারও দিলেন৷ তারপর আমরা একসঙ্গে ছবিও তুললাম৷ খুব আনন্দ হচ্ছে৷” যা শুনে কিংশুকবাবু বলছেন, “বড়দিনের আগে ছোটদের এ ভাবেই আমি আনন্দ দিয়ে যেতে চাই ৷”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy