Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Balurghat

খুনের পিছন কি মাদকের যোগ, চর্চা

নিহত শিশুকে সরকারি হোমে পাঠাতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করে এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়েন শহরের একে গোপালন কলোনি এলাকার তৃণমূলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা পুরপারিষদ সদস্য বিপুলকান্তি ঘোষ।

বস্তাবন্দি বালকের দেহ নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

বস্তাবন্দি বালকের দেহ নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

শান্তশ্রী মজুমদার
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪৫
Share: Save:

শিশুকে অপরহণ করে খুনের ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। শনিবার সন্ধে থেকে নিখোঁজ বালক দীপ হালদারের বস্তাবন্দি দেহ রবিবার সন্ধেয় উদ্ধারের পরে ঘটনার কথা জেনে শিউরে উঠছেন পড়শিরা। প্রাথমিক ভাবে এই অপহরণ এবং খুনের পিছনে এলাকায় মাদকের দাপটই সামনে আসছে। নেশার টাকা জোগাড় করতেই ওই বালককে অপহরণের ছক কষা হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। উত্তেজনা সামলাতে সন্ধে থেকেই এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এলাকায় মাদকাসক্ত অনেকেই এই ষড়যন্ত্রের পিছনে থাকতে পারে।’’

মৃত শিশু দীপের মা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেক দিন। পরে বাবা সঞ্জয়ও পরিবার ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে চলে যান। ফলে দুই ঠাকুমা, শেফালি এবং দীপ্তি মোহান্তর কাছেই বড় হচ্ছিল ওই বালক। তাঁর ঠাকুমারা অন্যের বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে বালককে প্রতিপালন করছিলেন। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই শিশুটি পাড়ায় প্রতিবেশীদের বাড়ি, এবং পাশে হাইস্কুলের মাঠে খেলে বেড়াত। ফলে এমন ভাবে তার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পড়শিরা অনেকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মানিক দাস বলেন, ‘‘ছেলেটার বাবা-মা নেই। আমাদের পাড়ায় সবার বাড়িতে আসত। আমরা ওকে নিজের ছেলের মতোই দেখতাম। কিন্তু মানস সিংহ যে এ রকম জঘন্য কাজ করবে, তা বুঝতে পারিনি। সবার সামনে ওকে ফাঁসি দিতে হবে।’’ আর এক বাসিন্দা বনমালী সরকারের কথায়, ‘‘আট বছরের ছোট্ট অবুঝ শিশু। সে মানসকে বিশ্বাস করে ওর সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়েছিল। এ রকম একটা ঘটনা ঘটানোর সময় তার পরিবারের কেউ মনেও করল না, এত বড় একটা অপরাধ সে করতে যাচ্ছে!’’

নিহত শিশুকে সরকারি হোমে পাঠাতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করে এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়েন শহরের একে গোপালন কলোনি এলাকার তৃণমূলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর তথা পুরপারিষদ সদস্য বিপুলকান্তি ঘোষ। রবিবার রাতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘শিশুটিকে বিক্রি করতে অপহরণ করা হয়েছিল। মারধরে মৃত্যু হলে দেহ খাঁড়িতে ফেলে দেওয়া হয়। পুজোর পরে ওই শিশুকে বালুরঘাটের শুভায়ন হোমে রেখে লেখাপড়া ও থাকা খাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। পরিবারের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’

শহরে মাদকের দাপট বাড়ায় এমন নানা ধরনের অপরাধ সঙ্ঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। কয়েক দিন আগেই হাসপাতাল চত্বরে অ্যাম্বুল্যান্স ভেঙে চুরিতে অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেফতারের পর জানা যায়, সেও মাদকে আসক্ত। জেলা পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত হচ্ছে কিনা সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এ রকম একটি ঘটনা।

এলাকাবাসীর দাবি, অভিযুক্ত মানসের সঙ্গে এলাকায় কিছু বহিরাগত যুবকদেরও মাঝেমধ্যে দেখা যেত। নেশার টাকা জোগাড় করতেই অপহরণের ছক কষা হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশকর্তারা। জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘‘ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Balurghat Child death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy