Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
NBU Student Death

ছাত্র-মৃত্যু: বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের নানা প্রশ্ন

র‌্যাগিংয়ের জেরে ছাত্র আত্মহত্যার অভিযোগ নিয়ে ওই তদন্ত শুরু হয়েছে পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে।

ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের। সোমবার মাটিগাড়া থানায়।

ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের। সোমবার মাটিগাড়া থানায়।  ছবি: স্বরূপ সরকার।

সৌমিত্র কুণ্ডু , অভিজিৎ সাহা
মালদহ, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১২
Share: Save:

ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর কবে জানলেন, কী ভাবে জানলেন? ছাত্রটিকে চিনতেন? হস্টেলে কত জন থাকেন? ঠিক কী ঘটেছে বলে জেনেছেন? পুলিশে বয়ান দিতে গিয়ে এমনই নানা প্রশ্নের মুখে পড়লেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল সুপার সিদ্ধার্থ লাহা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিক বরুণকুমার রায়। সোমবার মাটিগাড়া থানায় গিয়ে মালদহের গাজল থানার তদন্তকারী অফিসারের কাছে সে সব প্রশ্নের জবাব দেন তাঁরা।

র‌্যাগিংয়ের জেরে ছাত্র আত্মহত্যার অভিযোগ নিয়ে ওই তদন্ত শুরু হয়েছে পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে। এ দিন পুলিশের দাবি মতো, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দু’টি হস্টেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ওই ছাত্রকে আলাদা করে চিনতেন না। ক্যাম্পাসে দু’-তিন দিন ছিলেন ছাত্রটি। যাওয়ার সময় বলেও যাননি। তাঁর নাম ইতিহাস বিভাগের রেজিস্টারে নথিভুক্ত হয়নি। র‌্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগও ছাত্রটি তাঁদের কাছে করেননি বলে ওই আধিকারিকেরা জানান। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, আধিকারিকদের উত্তরে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা ‘সন্তুষ্ট’ নন। নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিক জানান, বাড়ি ফিরে ছাত্রটি আত্মহত্যা করেছেন বলে তিনি জানতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার পাঠানো সমাজ মাধ্যমের ‘লিঙ্ক’ থেকে জেনেছেন খবরটি।

গাজলের বাসিন্দা ইতিহাস বিভাগে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন উত্তম মার্ডি। বাড়ি ফিরে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটনায় র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। গত ১৬ অক্টোবর গাজলে জেঠার বাড়িতে শৌচাগারে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ। উত্তমের জেঠা জোনাস মার্ডি অভিযোগ তুলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরে থেকেই সিনিয়র পড়ুয়ারা তাঁকে গভীর রাতে ডেকে র‌্যাগিং করতেন, অশালীন মন্তব্য করতেন। ৩ অক্টোবর ভর্তির পরে বিদ্যাসাগর হস্টেলে ১০৩ নম্বর রুমে থাকতেন ওই পড়ুয়া। তিন দিন থেকেই ওই ছাত্র বাড়ি চলে গিয়েছিলেন।

এ দিন তদন্তকারী অফিসার ঋত্বিক সরকারের নেতৃত্বের মালদহ পুলিশের একটি দল জিজ্ঞাসাবাদ এবং আধিকারিকদের বয়ান নিতে এসেছিল। তার আগে, তদন্তের প্রয়োজনে ওই দুই আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে লিখিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পুলিশ আর্জি জানায়। ওই দুই আধিকারিকের পক্ষে মালদহে গিয়ে কথা বলা মুশকিল বলে মাটিগাড়া থানায় কথা বলা হবে ঠিক হয়। সে মতো বেলা ১০টা থেকে কথা বলার জন্য ওই দুই আধিকারিক গিয়েছিলেন।

পরে, তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিতের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা বিদ্যাসাগর এবং লাগোয়া রামকৃষ্ণ হস্টেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চান। আগেও তা জানিয়েছিলেন। তা পুলিশকে দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার এ দিন সংশ্লিষ্ট বিভাগে নির্দেশও দেন। সে মতো কম্পিউটার বিভাগে গিয়ে ৩-৬ অক্টোবর কোন সময়ের সিসি টিভির ফুটেজ লাগবে সে সব তারা জানান। মঙ্গলবার তা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘তদন্তকারী অধিকারিক গিয়েছেন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

north bengal university Student Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE