প্রতীকী ছবি।
কর্তব্যরত রেলের গেটম্যানকে গলা কেটে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল আলিপুরদুয়ারে। আলিপুরদুয়ার জংশন ও শামুকতলার মাঝে এসকে ১১১ নম্বর রেলগেটে ঘটনাটি ঘটেছে। সেখান থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে রেল লাইন থেকে গেটম্যানের রক্তাক্ত দেহটি উদ্ধার করে রেল পুলিশ। খুনে পর টেনেহিঁচড়ে দেহটি সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রেলকর্মীদের। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, দুষ্কৃতীদের কথা মতো বন্ধ গেট না খোলাতেই খুন হতে হয়েছে তাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গেটম্যানের নাম তাপস মল্লিক (৪০)। তাঁর বাড়ি আলিপুরদুয়ার জংশনের যমঠেক এলাকায়। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ ডিউটিতে যোগ দিতে ১১১ নম্বর রেলগেটের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান তিনি। সন্ধ্যা সাতটা থেকে তাঁর ডিউটি শুরু হয়। তাপসের স্ত্রী শম্পা মল্লিক বলেন, “রাত ন’টা নাগাদ স্বামী একবার ফোন করে তাঁর রাতের খাওয়া শেষ হয়েছে বলে জানান। রাত বারোটা নাগাদ ফের ফোন করেন। তখন জানান, গেট না খোলায় একটা ঝামেলা হয়েছে। তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। পরে জানান, ঝামেলা মিটে গিয়েছে। তার পর থেকে আমার সঙ্গে স্বামীর আর কথা হয়নি।”
রেল সূত্রে খবর, ঝামেলার সময় স্টেশনে ফোন করেছিলেন তাপস। স্টেশনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে লোক পাঠানোর কথা তাপসকে জানান। কিন্তু পরে ঝামেলা মিটে যাওয়ার কথা তাঁদেরও জানান। ফলে সেই গেটে কেউ আর যাননি। এরই মধ্যে গভীর রাতে ওই গেট থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে রেল লাইনের মধ্যে তাপসের দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন রেলের টহলদারি দলের কর্মীরা। তাঁরাই স্টেশনে খবর দেন। এর পরে রেল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
তাপসের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বন্ধ গেট না খোলার জন্য প্রথমে যে দুষ্কৃতীরা গেটে ঝামেলা করেছিল, তারাই তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করেছে। রেল কর্মী ও রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গেটের সঙ্গে থাকা কেবিনে ও কেবিনের বাইরে একাধিক জায়গায় রক্তের দাগ ও ধস্তাধস্তির ছাপ ছিল। যা দেখে তদন্তকারীদের একাংশর অনুমান, প্রচণ্ড ভাবে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন তাপস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে ব্যর্থ হতে হয়। খুনে পর দুষ্কৃতীরা দেহটি রেল লাইনের উপর দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ফলে রেল লাইনেও মেলে রক্তের দাগ।
তাপসের দাদা অনিমেশ মল্লিকের অভিযোগ, “আগেও ওই রেলগেটে এক গেটম্যানের মাথা ফাটিয়ে দেয় এক দুষ্কৃতী। বুধবার ঝামেলা শুরুর সময় দুষ্কৃতীদের মধ্যে সেও ছিল বলে ভাই তাঁর স্ত্রীকে ফোনে জানিয়েছিল। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” একই সঙ্গে গেটম্যানদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাপসের পরিবার ও রেলকর্মীরা।
আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম দিলীপকুমার সিংহ বলেন, “দুষ্কৃতীদের কথা মতো গেট না খোলাতেই ওই কর্মীকে খুন হতে হল বলে মনে হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি আরপিএফও ঘটনা তদন্ত করছে। দুষ্কৃতীদের দ্রুত ধরা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy