আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ মিছিল থেকে আটক হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির জেলাশাসক অফিস ঘেরাও অভিযান থেকে গ্রেফতার হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। দফায় দফায় বিজেপি নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের সাগরদিঘি। পুলিশি বাধা পেয়ে জেলাশাসকের অফিস থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে পুলিশ সুপারের অফিসে ইটবৃষ্টি করেন বিজেপির কর্মী এবং সমর্থকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। সোমবার দুপুর থেকে বিজেপি এবং পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্র সাগরগিঘি চত্বর। পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত নিশীথ-সহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং সাত জন মহিলা।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচার চেয়ে এবং রাজ্যে নারী সুরক্ষার দাবিতে জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দফতর ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল সোমবার। দুপুর ২টো নাগাদ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কোচবিহারের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ, কোচবিহারের জেলা বিজেপি সভাপতি সুকুমার রায়, বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী, মালতী রাভা প্রমুখের নেতৃত্বে মিছিল এগোচ্ছিল জেলাশাসকের দফতরের দিকে। ক্রমশ জেলাশাসকের দফতরের দিকে মিছিল এগোলে বাধা দেয় পুলিশ। তবে সেই বাধা কেটে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন নিশীথরা। এখনও জ়েড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান নিশীথ। নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই তিনি এগোচ্ছিলেন। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর।
ডিএসপি চন্দন দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা এবং আইসি তপন পালের সঙ্গে কথা কাটাকাটির, এমনকি ঠেলাঠেলি পর্যন্ত হয়েছিল। তখনই নিশীথকে আটক করে এসপি অফিসে নিয়ে চলে যায় পুলিশ। মুহূর্তের মধ্যে উত্তেজনাও বেড়ে যায় বিজেপি নেতা এবং কর্মীদের মধ্যে। স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা এগিয়ে যেতে চান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যে এসপি অফিসে ইটবৃষ্টি শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। সব মিলিয়ে রণক্ষেত্র এলাকা।
বস্তুত, রাজ্য জুড়ে বিজেপির এই কর্মসূচি ঘিরে নানা জায়গায় উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল থেকে উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি, পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছেন পদ্মশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আটক হয়েছেন বেশ কয়েক জন। বীরভূমের সিউড়িতে জেলা শাসকের দফতর অভিযানে ব্যারিকেড টপকে ভিতরে চলে যান জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহারা। পরে দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ বসেন তাঁরা। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। হাওড়ায় বিজেপির ওই কর্মসূচি থেকে গ্রেফতার হন দু’জন। হাওড়া কর্পোরেশনের সামনে ব্যারিকেডে আটকে যায় মিছিল। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা হলে বাধা দেয় পুলিশ। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে অপশাসন চলছে। পুলিশ ভীতসন্ত্রস্ত। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।’’ হুগলিতে ওই কর্মসূচিতে পুলিশের দিকে জুতো ছুড়তে দেখা যায় এক মহিলাকে। এ নিয়ে শোরগোল হয়।
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে ছাড়া পেয়েছেন নিশীথ-সহ অন্যান্যরা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। যদিও তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy