শিলিগুড়িতে সাংসদ রাজু বিস্তা। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে টানা ৬৩ দিন বন্ধ থাকার পর দিল্লি থেকে প্রথম বিমান বাগডোগরার মাটি ছুঁল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ। এর পরে দিনভর চলল ছ’টি বিমান। তবে কলকাতা-বাগডোগরা বিমান সংযোগ চালু হতে লাগবে আরও তিন দিন। ১ জুন থেকে সেই পরিষেবা চালু হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন প্রতিটি বিমানে যাত্রী সংখ্যা ভালই ছিল। বিভিন্ন সতর্কতা, নিয়মাবলী মেনে যাত্রীরা বিমানে ওঠানামা করেছেন।
এ দিনই দুপুরের দিকে দিল্লিরই আর একটি বিমানে চেপে দীর্ঘদিন পর জেলায় ফিরলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। আপাতত শিলিগুড়িতে হোম কোয়ারান্টিনে থাকবেন বলে সাংসদ জানিয়েছেন। প্রশাসন, পুলিশ, জিটিএ-র কাজের প্রশংসা করলেও করোনা এবং বিজেপি সাংসদের গতিবিধি আটকানোর অভিযোগ নিয়ে রাজ্যকে দুষছেন বিস্তা। তিনি বলেছেন, ‘‘সরকারি নিয়মে এখন শিলিগুড়ি বাড়িতে থাকব। দিল্লিতে বসেই আমি সংসদের এলাকার মানুষের সেবা করেছি। প্রশাসন, জিটিএ-র কর্মীরা ভাল কাজ করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের জন্য এখানকার এই হাল। লকডাউন যেন উৎসবে পরিণত হয়েছিল।’’ তিনি জানান, ‘‘আমাদের এলাকা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাশেই। অথচ সেখানে করোনা সংক্রমণ কম। কিন্তু এখানে রাজ্য সরকারের গাফিলতিতে করোনা ছড়িয়েছে।’’
সাংসদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেছেন, ‘‘মানুষের দুঃসময়ে পাশে না থেকে অন্য সময় বড় বড় কথা বলাটা খুব সোজা। ওঁকে নিয়ে কিছু বলতেই চাই না।’’ শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘বিরাট বক্তৃতা না দিয়ে সাংসদ আগে কোয়ারান্টিন পালন করুন।’’ গত ২৫ মার্চ থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতি মাসে ২৫ মে বিমানবন্দর চালুর কথা থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে তা পিছিয়ে যায়। এ দিন বিমান চালু হতেই সকাল থেকে বিমানবন্দরে যাত্রীরা ভিড় করতে থাকেন। যেমন শিলিগুড়ির ডাবগ্রামের ইন্দ্রানী চৌধুরী। লকডাউনের ঠিক আগে বাড়ি এসে আটকে যাওয়ায় দিল্লিতে চাকরি আর থাকবে কি না, জানেন না ইন্দ্রানী। আবার জলপাইগুড়ির সরকার পাড়ার সঞ্জয় সরকার। হরিদ্বারে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন। নির্দিষ্ট দিনে সেখানে গিয়ে যোগ না দিলে সমস্যা বাড়বে বলে জানিয়েছেন। বাবার শরীরের খারাপ হওয়ায় দিল্লি থেকে ফিরেছেন কিসানগঞ্জের বরুণ দপ্তরি, তেমনিই সংস্থার কাজ বন্ধ হওয়ায় বাড়ি এসে গিয়েছেন কাটিহারের বাসিন্দা গৌতম পূর্বা। লকডাউনে দিল্লিতে সংস্থা বন্ধ করে ফিরেছেন কোচবিহারের রাজকুমার ঠাকুরের মতো যাত্রীরা।
পরিযায়ী শ্রমিকেরাও এসেছেন এই বিমানে। চেন্নাই থেকে ফিরেছেন কারখানার তিন শ্রমিক। তাঁদের একজন কাটিহারের বাসিন্দা জিয়ারুল হক জানান, ‘‘কারখানা বন্ধ। বাড়ির মালিক ঘর ফাঁকা করে দিতে বলছেন। তাই টাকা জোগাড় করে ফিরে এসেছি।’’ এ দিন যাত্রীদের ল্যাগেজ, জুতো সানিটাইজ়ড করা হয়। বিমানবন্দরের গেটে চালকদের মাস্ক বিতরণ করেন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সন্দীপ সাহা, সায়ন্তন বসু, জয়ন্ত মজুমদারেরা। সকাল থেকে সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীদের ঘোরাফেরা, দেহ পরীক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy