সঙ্গী: পাহাড়ের যুবকের সঙ্গে ফিরল এই পোষ্যও। নিজস্ব চিত্র
পথের কুকুরের জন্য স্বর্গ ছাড়তে চেয়েছিলেন যুধিষ্ঠির। আর বেঙ্গালুরু থেকে দার্জিলিঙের বাড়িতে ফেরার সময় পড়শি সারমেয়কেই সঙ্গী করলেন পরিযায়ী শ্রমিকটি।
বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেনে ওঠার সময় সারমেয়টি একটু ভয় পেয়েছিল। তার পরে এনজেপি পর্যন্ত সে লক্ষ্মীছানার মতো চুপটি করে বসেছিল মনিবের কোলেই। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে দাঁড়িয়ে সারমেয়র সঙ্গী হাসছেন, ‘‘আসলে প্রথম ট্রেন-সফর তো! তাই ট্রেনে ওঠার সময় ভয় পেয়েছিল। তার পরে সারাটা পথ মহানন্দে জানলার বাইরে তাকিয়ে থেকেছে।’’
স্পেশ্যাল ট্রেনে আসা শ্রমিকদের জন্য বাস টার্মিনাসে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে নিজের বরাদ্দ বিরিয়ানি থেকে পোষ্যকে খাইয়েছেন দার্জিলিঙের ওই যুবক। যা দেখে টার্মিনাসে উপস্থিত অনেকেই এগিয়ে এসেছেন, ‘‘বলি, ব্যাপারটা কী!’’
বছর কয়েক আগে দার্জিলিং থেকে বেঙ্গালুরুতে কাজে গিয়েছিলেন ওই যুবক। তার পরে তিন জনের সংসারে নিজের আনুগত্যের গুণেই জায়গা করে নিয়েছিল সারমেয়টিও।
গোল বাধল লকডাউন ঘোষণার পরে। কাজ নেই। জমানো টাকাও ক্রমে ফুরিয়ে আসছে। এ দিকে, পরিবারের অনুগত সদস্যের জন্য এটা-ওটা নিয়ে আসতেই হচ্ছে! কথায় আছে, নিজের জোটে না, শঙ্করাকে ডাকে। পাহাড়ি যুবকের সারমেয়-প্রীতি দেখে বেঙ্গালুরুর পড়শিদের অনেকেই টিপ্পনি কেটেছিলেন। কিন্তু সে সব কথা গায়ে মাখেননি পাহাড় দেশের যুবক।
তিনি বলছেন, ‘‘এক শীত-সকালে ওকে পথে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। তার পর থেকে ও আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে গিয়েছে।’’
লকডাউনের সময়টা খুব কষ্টে কেটেছে ওই যুবকের। বাড়ি ফেরারও কোনও উপায় ছিল না। শ্রমিক ট্রেনের কথা শুনেই সপরিবার বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ওই যুবকের কথায়, ‘‘অনেকেই বলেছিলেন, কুকুরটাকে ওখানেই রেখে আসতে। কিন্তু আমি ওকে ছাড়তে পারিনি।’’
দার্জিলিংগামী বাসে উঠে জানলার পাশের সিটে বসল সারমেয়টি। তার পরে জানলার বাইরে মুখ বাড়িয়ে সে ডেকে উঠল— ভৌ...।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy