Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ফর্মে বিধায়কের সই নিতে লাইন

লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্মে বিধায়কের স্বাক্ষর পেতে দুপুর গড়িয়ে গেল। তার পরে বাড়ির পথ ধরলেন সকলে।

অপেক্ষা: শিশু কোলেও লাইন ফর্মে সই নিতে। চাঁচলে। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষা: শিশু কোলেও লাইন ফর্মে সই নিতে। চাঁচলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪৬
Share: Save:

আধার কার্ড সংশোধনের ফর্মে লাগবে বিধায়কের সই। সাতসকালে প্রচণ্ড ঠান্ডায় তা-ই ২০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বিধায়কের বাড়ির সামনে হাজির মালদহের চাঁচলের খানপুরের আফজল হোসেন। তিনি যে বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা, সেই মালতীপুরের বিধায়ক আলবেরুনী জুলকারনাইনের বাড়ির সামনে তখন লম্বা লাইন। লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্মে বিধায়কের স্বাক্ষর পেতে দুপুর গড়িয়ে গেল। তার পরে বাড়ির পথ ধরলেন সকলে।

আফজলের কথায়, ‘‘ভোটার কার্ডে আমার নাম আফজল হোসেন থাকলেও, আধারে মহম্মদ আফজল রয়েছে। বিধায়ক যে ফর্মে সই করলেন সেটা আগের দিন ৪০ কিলোমিটার দূরে বিহারের আবাদপুর থেকে নিয়ে এসেছি। এই ফর্ম ফের আবাদপুরে গিয়ে জমা করতে হবে। সঙ্গে ২০০ টাকা দিলেই নাম সংশোধন হবে।’’

শুধু আফজলই নন, এনআরসি আতঙ্কে আধার কার্ড সংশোধনের এমনই হিড়িক পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতি দিন সকাল হলেই বিধায়কদের বাড়ি বা সংশ্লিষ্ট শাসকদলের অফিসে জমছে কাজকর্ম ফেলে আসা উদ্বিগ্ন মানুষের ভিড়। হরিশ্চন্দ্রপুরের মাসুম সফিকি, নাজির হোসেনের মতো অনেকে জানান, বিহারের আধার-কেন্দ্রে কার্ডের ভুল সংশোধন করতে আগে ১০০ টাকা নেওয়া হলেও, ভিড় দেখে তা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এখানে হাতেগোণা কয়েকটি ব্যাঙ্ক, ডাকঘরে কয়েক মাসের ব্যবধানে এক বার আধার বা ভোটার কার্ড সংশোধনের ফর্ম দেওয়া হয়। তার পরে প্রতি দিন ২৫-৩০ জনের কার্ড সংশোধন করা হয়। সংশোধন কবে হবে তার নিশ্চয়তা সহজে মেলে না। ব্যাঙ্কে সেই ফর্ম পাওয়াও কঠিন।

অভিযোগ, সম্প্রতি কড়িয়ালির একটি ব্যাঙ্কে ফর্ম নেওয়ার জন্য এত ভিড় জমে যে গণ্ডগোলের জেরে সেখানে ভাঙচুর করা হয়। তাতে ফর্ম দেওয়া স্থগিত হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়েই ওই এলাকার অনেককে বিহারে যেতে হচ্ছে। ওই এলাকায় আগে যে এজেন্সির মাধ্যমে কাজ হত তা বন্ধ হয়েছে কেন, কেনই বা কার্ড সংশোধনে ব্যাঙ্ক, ডাকঘরের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না— বাসিন্দাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরাও সেই প্রশ্ন তুলেছেন।

হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, ‘‘কার্ড সংশোধনে ডাকঘর, ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়ে একাধিক চিঠি দিয়েছি। তা করা হলে বাসিন্দাদের এমন ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।’’ মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘ওই সমস্যা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি বিষয়টি দেখছেন। প্রতিটি ব্লকে আরও একটি করে ব্যাঙ্কে যাতে আধার কার্ড সংশোধনের কাজ করা হয়, তা নিয়ে জেলা প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে।’’

কিন্তু তাতেও সমস্যা মিটবে না বলে মনে করছেন মালতীপুরের বিধায়ক আলবেরুনী। তিনি বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি তাতে আগের মতো এজেন্সির মাধ্যমে ওই প্রক্রিয়া করা হলে দ্রুত সমস্যা মেটানো সম্ভব।’’

যদিও ওই এলাকায় এজেন্সির কাজে আপাতত ‘বাধা’ রয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে। কিন্তু কী সেই বাধা তা স্পষ্ট করেননি প্রশাসনের কর্তারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Aadhaar MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy