সাবেক ছিটমহলগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার দাবিতে লোকসভায় সরব হলেন তৃণমূলের সদ্য নির্বাচিত সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। পার্থবাবুর প্রস্তাবের প্রশংসা করেও এ ব্যাপারে রাজ্যকেই দুষেছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তিনি বলেন,‘‘দিশা প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত ছিল এ বিষয়ে মন্ত্রককে জানানো। তাহলে ওই সমস্যা মেটাতে যৌথ পদক্ষেপ করা যেত।’’
ছিটমহল বিনিময়ের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর। তা সত্ত্বেও সাবেক ছিটমহলগুলিতে পৌঁছায়নি বিদ্যুতের মতো জরুরি পরিষেবা। এই বিষয়টি তুলে ধরেই বৃহস্পতিবার লোকসভায় পার্থবাবু বলেন, ‘‘আমার জেলা কোচবিহারের ৫০টি মৌজায় থাকা সাবেক ছিটমহলগুলিতে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছোয়নি। বাসিন্দারা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সীমান্ত থাকায় নিরাপত্তার প্রশ্নেও ওই এলাকায় বিদ্যুৎ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।’’ জবাবে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্বন্ধে আমার কোনও ধারণা ছিল না। সাংসদকে ধন্যবাদ।’’
তাঁদের এলাকায় বিদ্যুতের দাবিতে সরব হয়েছেন সাংসদ। এই খবর পৌঁছেছে সাবেক ছিটেও। বাসিন্দাদের অনেকেই তাই সাধুবাদ জানিয়েছেন সাংসদকে। পোয়াতুর কুঠির বাসিন্দা সাদ্দাম মিয়াঁ বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তেমন ভাবে কোনওটাই পূরণ হয়নি। বিদ্যুৎ না থাকার ফলে আমাদের অন্ধকারেই জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সাংসদ সেই বিষয়টি তুলে ধরায় তাঁকে ধন্যবাদ।”
এখনও মোটের উপর নেই রাজ্য বাস তাঁদের। কেউ এখনও আধার কার্ড পাননি। কেউ পাননি রেশন কার্ড। শুধু তাই নয়, বাসিন্দাদের অনেকের বাড়িতেই এখনও শৌচাগার হয়নি। রাস্তাঘাট নেই। অস্থায়ী শিবিরের বাসিন্দাদের এখনও স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনই হাজারো অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ওই আন্দোলন হয়। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ শিবিরের বাসিন্দাদের একাংশ ওই আন্দোলনে যোগ দেন। তাঁরা বলেন, “দেড় বছর পেরিয়ে গেল অস্থায়ী ভাবে আছি। এ বারে একটু কিছু ভাবা দরকার।” এ দিন করলা ছিটমহলের বাসিন্দা ওবায়েদুল হক, জিয়ারুদ্দিন মিয়াঁ, আব্দুল জলিলরা অভিযোগ করেন, তাঁদের এলাকায় রাস্তা কাজ শুরু হচ্ছে। ওই কাজ নিম্নমানের হচ্ছে। তাঁদের আশঙ্কা, খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তার হাল খারাপ হয়ে পড়বে। উত্তর বারজানি এলাকার বাসিন্দা আনসার মণ্ডল, নন্দ বর্মন, জাহাঙ্গীর আলমরা অভিযোগ করেন, তাঁরা এখনও আধার কার্ড, রেশন কার্ড কোনওটাই পাননি। তাঁরা বলেন, “ওই ব্যাপারে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” ফলনাপুর সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দা কমল বর্মন বলেন, “উন্নয়নের ছিটেফোঁটা নেই। বাড়িতে একটি শৌচাগার পর্যন্ত সরকার তৈরি করে দেয়নি। আমরা যে তিমিরে ছিলাম, সেখানেই আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy