প্রতীকী ছবি
এবারে আদিবাসীদের জন্য আলাদা ভাবে বার্ধক্য ভাতা দেবে রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্য বাজেটে ওই ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর ওই ঘোষণার পরে রাজ্যের শাসক দলের উত্তরবঙ্গের নেতা-কর্মীরা তা নিয়ে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন।
তৃণমূলের দাবি, ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকেই আদিবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশ্য বসে নেই বিরোধীরাও। তাদের পাল্টা দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই আদিবাসীদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে সময় চা বাগানে অনাহার চলছিল তখন রাজ্যের শাসক দল পাশে দাঁড়ায়নি। এমন কথাও উঠেছে, ষাটোর্ধ্ব গরিব মানুষের জন্য বার্ধক্য ভাতা আগে থেকেই চালু ছিল। প্রশ্ন, তা হলে নতুন করে শুধু আদিবাসীদের জন্য তা দেওয়ার মানে কি? উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষের পাশে বরাবর রয়েছেন। তেমনই রয়েছেন তফসিলি জাতি ও জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে। তাঁদের জন্য মাসিক ভাতা দিয়েছেন। এই বাজেট অসাধারণ।” তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলার প্রাক্তন সাংসদ তথা আদিবাসী নেতা দশরথ তিরকে থেকে শুরু করে কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূলের তফসিলি জাতির নেতা পার্থপ্রতিম রায় একই দাবি করেছেন। তাঁদের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের পাশে রয়েছেন। তাঁদের পাশে আর কেউ নেই।”
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার সাংসদ তথা আদিবাসী নেতা জন বার্লা তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “যখন চা বাগানে মৃত্যু মিছিল চলছিল, মানুষ অভুক্ত অবস্থায় ছিলেন, তখন তাঁদের পাশে তৃণমূল সরকার ছিল না। এখন বুঝতে পেরেছে, মানুষ সরে গিয়েছে। তাই নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে। তাতে কিছু লাভ হবে না।”
লোকসভা নির্বাচনে তফসিলি জাতি ও জনজাতি এলাকাতেই তৃণমূলের ভরাডুবি হয়। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি থেকে উত্তর দিনাজপুর বা মালদহের তফসিলি জাতি ও জনজাতি এলাকা বিজেপির দখলে চলে যায়। কোথাও তৃণমূল একটি আসনও পায়নি। দলীয় সূত্রের খবর, টিম পিকে সমীক্ষায় নেমেও তথ্য পেয়েছে, ওই দুই সম্প্রদায়ের মানুষ তৃণমূল থেকে সরে গিয়েছে। এর পরেই তাঁদের মন জয় করতে আসরে নামে তৃণমূল। তফসিলি জাতি ও জনজাতি নেতা-মন্ত্রীদের গ্রামে গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূল নেত্রী। দল মন করছে, তাতে কিছুটা ফল হয়েছে। কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল। বাজেটে জয় জহার যোজনায় বার্ধক্য ভাতা ঘোষণার ফলে মানুষ খুশি হবেই বলে মনে করছে দল। তফসিলিদের জন্য তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় হবে সেইদিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন সবাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy