চা বাগানে কর্মীরা। — ফাইল চিত্র।
শুধু শ্রমিক নয়, চা বাগানের জমিতে বসবাসকারী ‘বহিরাগতদের’ও জমির পাট্টা দেবে রাজ্য সরকার। চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা দিতে সমীক্ষা শুরু করতে উত্তরবঙ্গের জেলা প্রাশাসনগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সে সঙ্গে রাজ্যের ভূমি দফতরের নির্দেশ, চা বাগানের জমি ‘দখল’ করে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে রয়েছেন কিন্তু চা শ্রমিক নন, এমন যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও সমীক্ষায় যুক্ত করতে হবে। এই পরিবারগুলি যদি পাট্টা পাওয়ার সব শর্ত পূরণ করে, তবে তাঁদেরও বাগানের ভিতরে পাট্টা দেবে সরকার। যদিও এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য নিয়ে বেধেছে চাপান-উতোর। এ ভাবে ‘জবরদখলকারীদের’ স্বীকৃতি দেওয়া হলে, চা বাগান চলবে কী করে সে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তবে রাজ্য ভূমি দফতরের তরফে দাবি, কোনও ভাবেই যাতে পাট্টা দিতে গিয়ে বাগানের স্বাভাবিক কাজকর্মে সমস্যা না হয়, তা দেখতে হবে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু শনিবার বলেন, ‘‘আমরা ভূমি দফতরের নির্দেশ পেয়েছি। বাগানের শ্রমিক নন, অথচ, দীর্ঘদিন অস্থায়ী আস্তানায় বাস করেন, এমন মানুষেরাও শর্তসাপেক্ষে পাট্টা পেতে পারেন। তবে কোনও ভাবেই পাট্টা দিতে গিয়ে, যাতে চা বাগান চালানোয় সমস্যা না হয়, দেখা হবে।’’
আগামী সপ্তাহে রাজ্যের ভূমি কমিশনার স্মারকী মহাপাত্রের উত্তরবঙ্গে আসার কথা। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং দার্জিলিং জেলায় যাওয়ার কথা তাঁর। সমীক্ষার কাজ দেখবেন, বাগানে যাবেন এবং প্রশাসনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। চা বাগান মালিকদের সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে বলে খবর। চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে অবসরপ্রাপ্ত এবং যাঁরা অবসরের মুখে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এ বার তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে চা বাগানের জমিতে বসবাসকারী কিন্তু শ্রমিক নন এমন পরিবারকেও। রাজ্য ভূমি দফতরের এক কর্তার কথায়, “এটি একটি প্রক্রিয়া। ধাপে ধাপে সকলেই পাট্টা পাবেন। সকলে বলতে, যাঁদের চা বাগানে আবাসনে থাকার সুযোগ নেই।”
প্রাথমিক সমীক্ষায় ভূমি দফতর দেখেছে, বহু চা বাগানের খালি পড়ে থাকা জমিতে কলোনি তৈরি হয়েছে। অন্তত এক থেকে দেড়শ পরিবারের বসবাস। সে পরিবারগুলিকেও পাট্টা দেবে সরকার। খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে যাতে পাট্টা দেওয়ার জন্য জমি নিয়ে নিলে চা বাগান চালাতে কোনও সমস্যা না হয়। ভূমি সংস্ককার দফতরের ওই কর্তার কথায়, “কোনও বাগানে যদি প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া না যায়, তা হলে সে বাগানের শ্রমিক বা বসবাসকারীকে পাশের কোনও বাগানের বা লাগোয়া এলাকার জমিতে পাট্টা দেওয়া হবে। চা উৎপাদনে সমস্যা হয় এমন কোনও পদক্ষেপ হবে না।”
চা বাগান মালিকপক্ষ আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে। সরকারি ভাবে এই বার্তা জানানোর অপেক্ষা করছেন। বাগানদের একটি পরিচালক সংগঠনের তরফে আইনজীবী এবং প্রাক্তন বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া বলেন, “যাঁরা চা বাগানের শ্রমিক নয়, কিন্তু ওই বাগানে বাধ্য হয়ে বসবাস করেন, তাঁদের আর কোথাও যাওয়া জায়গা নেই। তাঁদেরও জমির অধিকার দিয়ে রাজ্য সরকার ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে।” জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের মন্তব্য, “তৃণমূল আসলে ভোট গুনছে। এর পরে হয়তো চা বাগানই তুলে দেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy