ধৃতেরা বালুরঘাট আদালতে। নিজস্ব চিত্র
দণ্ডি-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুই তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করল। বৃহস্পতিবার সকালে বালুরঘাট শহরের কংগ্রেসপাড়া থেকে আনন্দ রায় এবং সাহেবকাছারি এলাকা থেকে বিশ্বনাথ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। আনন্দ তৃণমূলের শহর যুব কমিটির সাধারণ সম্পাদক। দু’জনেই পুরসভার অস্থায়ী কর্মী বলে দল সূত্রে খবর। এ দিকে, আদিবাসী মহিলাদের নিগ্রহের অভিযোগে বুধবার রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে চিঠি দিয়ে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে রাষ্ট্রীয় তফসিলি জনজাতি কমিশন।
বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাষ্ট্রীয় জনজাতি কমিশনে অভিযোগ করে তাঁর সংসদ এলাকায় আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কাটিয়ে নিগ্রহের বিচার চান। এর পরে, ১২ এপ্রিল কমিশন থেকে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে ওই চিঠি পাঠানো হয়। তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট না দিলে, আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে কমিশনের অধিকর্তা ওই চিঠিতে ডিজিকে সতর্ক করেন। বুধবার রাতে ওই চিঠি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পৌঁছতেই অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। অভিযুক্তদের ধরতে বুধবার রাতেই তপনের গোফানগর এলাকায় পুলিশ অভিযান চালায়। তবে তখন কেউ ধরা পড়েনি।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে অভিযুক্তদের ধরতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ এ দিন দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বালুরঘাট শহর থেকে এ দিন সকালে দলের ওই দু’জন গ্রেফতার হতেই তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ দিন বালুরঘাট আদালতের নির্দেশে ধৃত দু’জনের তিন দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ আদিবাসী নিগ্রহ ও এসসি এসটি আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে। বিচারক তাঁদের তিন দিন জেল হেফাজতে রাখার দেন। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিতে আদালতের কাছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ কোনও আবেদন করেননি বলে তিনি জানান। ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী দেবরাজ চক্রবর্তী দাবি করেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে ধৃতরা কোনও ভাবেই যুক্ত নন। বিচারকের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।’’ বিচারক ১৭ এপ্রিল জেল থেকে তাদের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে দেবরাজ জানান।
যদিও ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন মহিলা জেলা সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে আড়াল করতে জেলা পুলিশ মামলা সাজাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকারের মন্তব্য, ‘‘এক দিকে, কালীঘাটের নির্দেশ। অন্য দিকে, এসটি কমিশনের ওই চিঠি। পুলিশ এখন উভয় চাপে পড়েছে।’’ গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের ওই দু’জন সাধারণ কর্মীর নির্দেশে দলের সদ্য প্রাক্তন মহিলা সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তী ‘ওই কাজ’ (দণ্ডি-কাণ্ড) ঘটাবেন, এমন ধরে নেওয়া ‘হাস্যকর’ বলেও দাবি করেন তিনি। প্রদীপ্তাকে আড়াল করতে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে, ‘নাটক সাজানো হচ্ছে’ বলে বাপির পাশাপাশি, আরএসপির রাজ্য নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস দাবি করেন। দণ্ডি-কাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান সুচেতা। তবে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তদন্ত ঠিক পথে চলছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘দণ্ডি-কাণ্ডে প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করুক। ঘটনায় বিশেষ কাউকে আড়াল করতে নিরীহ ও সাধারণ কাউকে ধরে মূল অভিযুক্তদের আড়ালের চেষ্টা যেন না হয়, তা প্রশাসনকে দেখতে হবে।’’ এটাই ‘দলের অবস্থান’ বলে তিনি দাবি করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy