Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চোখ দানে ব্যবস্থা উত্তরে

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অনুমোদনপ্রাপ্ত আই ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বাতানুকূল ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ইত্যাদি বিভিন্ন সরঞ্জামের তালিকা তৈরি করে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৯
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের প্রথমবার সরকারিভাবে মরণোত্তর চক্ষু দানের ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। এই অঞ্চলের প্রথম সরকারি ‘আই ব্যাঙ্কের’ অনুমোদন পেল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের চিঠি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে এসে পৌঁছেছে। এর পরে মেডিক্যাল কলেজে প্রস্তাবিত আই ব্যাঙ্ক গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অনুমোদনপ্রাপ্ত আই ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বাতানুকূল ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ইত্যাদি বিভিন্ন সরঞ্জামের তালিকা তৈরি করে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। কলকাতায় তা পাঠানোর পরেই কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল অব ব্লাইন্ডনেস’ বা এনপিসিবি’র তরফে টাকা মঞ্জুর করা হবে। কিছু যন্ত্রপাতি কলকাতা থেকে সরাসরি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হবে।

আর কিছু যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিজেদেরই করতে হবে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের আশা, খুব বেশি হলে আগামী ৪-৬ মাসের মধ্যে আই ব্যাঙ্কটি চালু হয়ে যাবে।

ব্যাঙ্কটি চালু হলে সেখানে গিয়ে যে কেউ নির্দিষ্ট নথি পূরণ করে স্বেচ্ছায় চোখ দানের অঙ্গীকার করতে পারবেন। তেমনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে চোখের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারবেন দৃষ্টিহীনরাও। গত কয়েক বছর আগে আলিপুরদুয়ারে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আই ব্যাঙ্ক চালু করে। কিন্তু তা পরিকাঠামোগত নানা সমস্যায় ঠিকমতো চলেনি। গত বছর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল আই ব্যাঙ্ক চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগ শুরু করে। সম্প্রতি চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ তথা মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগের আরএমও গঙ্গোত্রী বাড়ুই কলকাতায় স্বাস্থ্য দফতরের আই ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে পরিকাঠামোগত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।

মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গবাসীর কাছে এটি একটি সুখবর। অনুমোদনের চিঠি আমরা হাতে পেয়ে গিয়েছি। এ বার পরিকাঠামোর কিছু কাজ করে আই ব্যাঙ্কটি চালুর প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’ তিনি জানান, ভবনের পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে। আলাদা করে কিছু কর্মীর প্রয়োজন হবে। স্বাস্থ্য দফতরকে সব জানানো হচ্ছে।

সরকারি সূত্রের খবর, মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাসির উপরের তলায় নবনির্মিত ফ্লোরে আই ব্যাঙ্কটি চালু হবে। সেখানে একটি নতুন আই ওটি-ও রয়েছে। প্রথম ধাপে মেডিক্যাল কলেজেই মারা গিয়েছেন, এমন রোগীর পরিবারের সম্মতিতে কর্নিয়া নিয়ে তা অন্য জনের চোখে প্রতিস্থাপন করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে বাইরের জেলা বা অন্যত্র থেকে কর্নিয়া আনার ব্যবস্থা করা হবে।

সাধারণত মৃত্যুর পর চার ঘণ্টার মধ্যে চোখ বা কর্নিয়া নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তার পরে যতটা দ্রুত সম্ভব তা প্রতিস্থাপন করতে হয়। তবে তা সংরক্ষণের জন্যও আই ব্যাঙ্কে ব্যবস্থা থাকে। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চোখ বিভাগে ২০০ উপর রোগী আসেন রোজ। ভর্তি থাকেন ৪০ থেকে ৭০ জনের মধ্যে। ৫ জন চিকিৎসক এবং ৬ জন প্রোস্ট গ্র্যাজুয়েট পাঠরত চিকিৎসক বিভাগটি চালাচ্ছেন। নতুন ব্যবস্থার জন্য রাজ্যের কাছে আরও কয়েক জন চিকিৎসক এবং কর্মী চাইবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Medical College Eye Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy