নির্মল বিদ্যালয় কর্মসূচিতে পদযাত্রা মালদহে। —নিজস্ব চিত্র।
খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া—কর্মসূচি দিয়ে সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে বিদ্যালয়গুলিতে সপ্তাহব্যাপী নির্মল বিদ্যালয় কর্মসূচি শুরু হল।
আজ, মঙ্গলবার প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা মন্ত্রী সংসদ গঠন করে কেন নিরাপদ পানীয় জল ব্যবহার জরুরি, তা নিয়ে আলোচনা করবে। শিক্ষকদের নেতৃত্বে এলাকার কতগুলি পরিবার সুলভ শৌচাগার ব্যবহার করেন। পানীয় জলের উৎস সম্পর্কে সমীক্ষা করে ৯ অগস্ট ওই রিপোর্ট স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কিংবা প্রধানের কাছে তুলে ধরবে খুদে পড়ুয়ারা। ১০ এবং ১২ অগস্ট দু’দিন খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগের কুফল সম্পর্কে আলোচনা করে পড়ুয়াদের সচেতন করে সেই বার্তা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এ দিন তপন ব্লকের পূর্বচক্রের অধীন প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রার্থনা সঙ্গীতে নির্মল বিদ্যালয়ের গান গেয়ে ওই কার্যক্রমের সূচনা হয়। তপন ব্লকের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিজয়াশিস ঘটক জানান, আগামী ১২ অগস্ট প্রতিটি বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের পরে ছাত্রছাত্রীকে কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো হবে। পর্যায়ক্রমে পরিবেশের পরিচ্ছন্নতার উপরে স্কুল পড়ুয়াদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা ও সচেতনার প্রচার মিছিলের মাধ্যমে আগামী ১৪ অগস্ট শেষ হবে সপ্তাহব্যাপী ওই কর্মসূচি।
রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা সর্বশিক্ষা মিশন দফতরের সামনে ওই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জেলাশাসক আয়েসা রানি। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি আলেমা নুরি, সহকারী সভাধিপতি পূর্ণেন্দু দে সহ জেলা প্রশাসন, সর্বশিক্ষা মিশন ও শিক্ষা দফতরের কর্তারা। ওই অনুষ্ঠানে রায়গঞ্জের বিভিন্ন প্রাথমিক ও হাই স্কুলের কয়েক হাজার পড়ুয়া যোগ দিয়েছিল। এ দিন বিকেলে পড়ুয়াদের নিয়ে শহরে পদযাত্রা হয়। মিশনের প্রকল্প আধিকারিক সোমনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশে আগামী ১৩ অগস্ট পর্যন্ত জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, ইসলামপুর ও চোপড়া ব্লকে নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হবে। জেলার হাই ও প্রাথমিক স্কুল মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার স্কুলের পড়ুয়াকে আগামী এক সপ্তাহ শিক্ষকেরা স্কুল ও বাড়িকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, খাবার আগে হাত ও মুখ ধোওয়া, স্বাস্থ্যবিধান মেনে শৌচাগার ব্যবহার করা এবং শৌচাগার ব্যবহারের পর ভাল করে হাত ধোওয়ার ব্যাপারে সচেতন করবেন। নানা অনুষ্ঠান, পদযাত্রা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ আঁকা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পড়ুয়াদের সচেতন করা হবে।
কোচবিহারেও নির্মল বিদ্যালয় অভিযান ১৩ অগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলার মূল অনুষ্ঠানটি হয় জেলাশাসক দফতর চত্বরের ল্যান্সডাউন হলে। ওই অনুষ্ঠানে কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন, কোচবিহার জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সুচিস্মিতা দেবশর্মা, সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক সৌগত মাইতি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও যোগ দেন। বিদালয়, লাগোয়া এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি ‘নির্মল কোচবিহার’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বক্তারা শিক্ষকদের সচেতনতা বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হতে আর্জি জানান।
এ ছাড়াও স্কুল পড়ুয়াদের বাড়িতে ‘শৌচাগার’ রয়েছে কি না, সে সব তথ্য নিয়ে ‘নির্মল রেজিস্টার’ তৈরি করার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে শৌচাগার তৈরির জন্য পড়ুয়াদের মাধ্যমে অভিভাবকদের উৎসাহিত করা, সচেতনতা বাড়াতে প্রচার, পড়ুয়াদের নিয়ে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা আয়োজনের ব্যাপারেও আলোচনা হয়। কোচবিহার জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সুচিস্মিতা দেবশর্মা জানান, ‘‘একযোগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ দিন ২০টি এলাকায় প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান হয়েছে। পড়ুয়াদের তালিকা নিয়ে নির্মল রেজিস্টার তৈরি, বাড়িতে শৌচাগার না থাকলে অভিভাবকদের ফোন করে ডেকে এনে বোঝানোর কথাও বলা হয়েছে।’’ সমস্ত পড়ুয়ারা যাতে খাবার আগে হাত ধুয়ে নেয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতেও সভায় জোর দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy