Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Netaji

এই বাড়িতে বসেই কবিকে চিঠি লেখেন নেতাজি

কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ের বাড়িটি নেতাজির দাদা শরৎচন্দ্র বসু কিনেছিলেন অসমের এক ডেপুটি পুলিশ সুপারের থেকে। তখন ১৯২২ সাল। এই বাড়িতে ১৯৩৬-এর জুন থেকে ডিসেম্বর নেতাজিকে ব্রিটিশরা গৃহবন্দি করে রাখে বলে তথ্য রয়েছে।

ঐতিহাসিক: কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ের সেই বাড়ি। ফাইল চিত্র

ঐতিহাসিক: কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ের সেই বাড়ি। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৫
Share: Save:

নেতাজির ছবির সামনে ধূপ জ্বেলেই এখনও প্রতিদিন সকাল শুরু হয় পাহাড়ের কোলে সাদা বাড়িটায়। ব্রিটিশ স্থাপত্যে তৈরি ওই বাড়িতে বড় বড় পাল্লা দেওয়া জানলা। তিনকোনা আর্চের ভঙ্গিতে টিনের চাল। সদর দরজা দিয়ে ঢুকে বারান্দা, পাশেই গোলাকৃতি বৈঠকখানা। কার্শিয়াংয়ের বাড়িতেই টানা ছ’মাস গৃহবন্দি থাকতে হয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে। তার পরেও নানা সময়ে তিনি ওই বাড়িতে যান বলে জানা যায়। গবেষকদের দাবি, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোর ক্ষতি করে কোনও আইন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় কিনা, তা নিয়ে এই বাড়িতে বসেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে চিঠিতে আলোচনা শুরু করেন নেতাজি। এনআরসি, সিএএ নিয়ে যখন দেশ উত্তাল, তখন নেতাজির কার্শিয়াংয়ের বাড়িতে রাখা কবির লেখা চিঠির যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।

কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ের বাড়িটি নেতাজির দাদা শরৎচন্দ্র বসু কিনেছিলেন অসমের এক ডেপুটি পুলিশ সুপারের থেকে। তখন ১৯২২ সাল। এই বাড়িতে ১৯৩৬-এর জুন থেকে ডিসেম্বর নেতাজিকে ব্রিটিশরা গৃহবন্দি করে রাখে বলে তথ্য রয়েছে। পরে নেতাজি ‘মুক্ত’ অবস্থাতেই এই বাড়িতে এসেছেন। এটি এখন নেতাজি সংগ্রহশালা। রয়েছে রবীন্দ্রনাথের লেখা চিঠি। সেই চিঠিতে ‘বন্দেমাতরম’ গান প্রসঙ্গে নেতাজিকে কবি লেখেন, ‘...বঙ্কিম এই গানে বাংলাদেশের সঙ্গে দুর্গাকেও একাত্ম করে দেখিয়েছেন। কিন্তু স্বদেশের এই দশভূজা মূর্তি রূপের যে পূজা যে কোনও মুসলমান স্বীকার করে নিতে পারে না।’ তার পরেই রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, ‘যে রাষ্ট্রসভা ভারতবর্ষের সকল ধর্ম সম্প্রদায়ের মিলনক্ষেত্র, সেখানে এই গান সর্বজনীন ভাবে সঙ্গত হতেই পারে না।’

নেতাজির জন্মদিনে সেই স্মৃতিও মনে করাচ্ছেন গবেষকদের অনেকে। নেতাজি নিয়ে তথ্য সংগ্রাহক জলপাইগুড়ি পুরসভার বাস্তুকার সুব্রত বাগচী বলেন, “নেতাজি মানেই মুক্ত চিন্তা। কার্শিয়াঙের গিদ্দাপাহাড়ের বাড়িতে এমন অনেক কিছুই সে কথার প্রমাণ দেবে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যে নেতাজির গভীর আলোচনা হত, তার প্রমাণ রয়েছে। এই সময়ে এইসব তথ্য আরও বেশি করে সর্বসমক্ষে আসা উচিত।”

অন্য বিষয়গুলি:

Subhashchandra Bose Netaji Rabindranath Tagore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE