নেপালে ভূমিকম্পের দৃশ্য। —ফাইল চিত্র।
নেপালের ধারাবাহিক ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ল এ বার পর্যটনে। গত নভেম্বর জাজরকোটের ভূমিকম্পের পরে নেপাল নিয়ে পর্যটন মহলে উদ্বেগ, আশঙ্কা ছড়িয়েছে। সোমবার সকালে নেপাল পর্যটন বোর্ডের তরফে তা কাটাতেই নতুন করে বার্তা দেওয়া হয়। তারা জানায়, নেপালের পর্যটন কেন্দ্রগুলি সুরক্ষিত। বিষয়টি নিয়ে তারা প্রচারও শুরু করে। এরই মধ্যে বিকেলে আবার কেঁপে ওঠে নেপাল। জাজরকোট থেকে কাছেই ফের এক ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল রিখ্টার স্কেলে ৫.৬। দিল্লি এবং এনসিআরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। পর পর দুই দফায় এই কম্পন নেপালের ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের স্মৃতিকে আবার ফিরিয়ে এনেছে।
এই অবস্থায় আগামী কিছু দিন পর্যটকেরা কতটা নেপালমুখী হবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের এক সচিব জানান, নেপালে পর্যটন ব্যবসায় গত তিন বছরে ১০০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি হয়েছে। সেখানে সবচেয়ে বড় সংখ্যক পর্যটক যান ভারত থেকেই। এর পরেই রয়েছে আমেরিকা। ২০১৫ সালের পরে, এভারেস্ট সামিট থেকে শুরু করে বেসক্যাম্পেও লোক কমেছিল। কাঠমাণ্ডু থেকে পোখরা, সর্বত্র প্রায় পর্যটকশূন্য, ফাঁকা হয়েছিল রাস্তাঘাট। এ বারেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সচিব বলেন, ‘‘নেপাল টুরিজ়ম বোর্ডের তরফে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা শুরু হতেই দ্বিতীয় দফার ভূমিকম্পে সব ওলটপালট করে দিল। আপাতত ক’দিন পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার পরেই অবস্থা সামনে আসবে। তবে দীপাবলিতে নেপালে লোকজন কমই যাবে। বুকিংও বাতিল হতে শুরু করেছে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, গত ৩ নভেম্বর জাজরকোটে ভূমিকম্প হয়। রিখ্টার স্কেলে তা ৬.৪। শিলিগুড়ি থেকে আকাশের সীমানার পরিমাপে উৎসস্থলের দূরত্ব ছিল ৬৬১.৪৪ কিমি। তিন দিনের মাথায়, ৬ নভেম্বর জাজরকোটের কাছে আবার ভূমিকম্প হল। এ বার তীব্রতা ৫.৬। শিলিগুড়ি থেকে উৎসস্থল ৬৪৯.২ কিমি। বহু পর্যটক এ পার থেকে কাঁকরভিটা হয়ে নেপালে ঢোকেন। তার পরে ভরতপুর, কাঠমাণ্ডু হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যান। ২০২০ সালে বিদেশি পর্যটক নেপালে যান মাত্র ২০২৫ জন। সেটা ২০২৩ সালে জানুয়ারি থেকে অক্টোবর অবধি দাঁড়িয়েছে আট লক্ষ ৯,৬৭৮ জন। দীপাবলি, বড়দিন, নতুন বছরের মরসুমে তা আরও বৃদ্ধির দিকেই যাচ্ছিল।
উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, গত ৪ অক্টোবর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে হড়পা বানের পরে সতেরো দিন জাতীয় সড়ক বন্ধ ছিল। উত্তর সিকিম পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রাস্তা খুললেও বহু দেশ, বিদেশের পর্যটক সিকিম বাতিল করে নেপাল ও ভুটানে যাওয়ার পরিকল্পনা নেন। অনেকে ঘুরে এসেছেন। অনেকে দীপাবলির সময় যাওয়ার বুকিংও করেছিলেন। এ বার সেগুলি সবই বাতিলের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সিকিমের পরিবর্তে, নেপাল ও ভুটানের বুকিং চলছিল। প্রথম ভূমিকম্প থেকে খোঁজখবর বেড়ে যায়। আর এক বার ভূমিকন্প হওয়ায় নেপালে পর্যটক কমবে বলেই মনে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy