Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
MIgrant Workers

৩৬টি ট্রেনে ফিরছেন ওঁরা, চিন্তা প্রশাসনে

শহরের কাছেই আর একটি গ্রাম থেকে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরে একাধিক বার ফোন গিয়েছে, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে একাধিক মানুষ ফিরেছেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

রাত তখন গভীর। তিনটি বাস পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ফিরছিল। মাঝরাস্তায় বাসটি আটকে দেয় পুলিশ। পরে কয়েকজনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়। বাকিদের রাখা হয় হোম কোয়রান্টিনে। ওঁদের অধিকাংশের বাড়ি কোচবিহারের দিনহাটায়। কিন্তু ওঁরা গ্রামে ফিরতেই উষ্মা প্রকাশ করেন বাসিন্দাদের একাংশ।

শহরের কাছেই আর একটি গ্রাম থেকে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরে একাধিক বার ফোন গিয়েছে, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে একাধিক মানুষ ফিরেছেন। কিছু একটা করুন আপনারা।’’ অভিযোগ, সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েই দায় সেরেছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। এমন অবস্থায় এ বারে আরও ৩৬টি ট্রেন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ফিরবে কোচবিহারে। তার মধ্যে রেড জ়োন মহারাষ্ট্র, দিল্লি থেকে অন্ততপক্ষে ১০টি ট্রেন রয়েছে। ওই যাত্রীদের নিয়ে চিন্তায় পড়েছে প্রশাসন।

বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠকও করেছে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে প্রশাসনের চিন্তা বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে। এমনিতেই বর্তমানে পরীক্ষা হচ্ছে খুব ধীর গতিতে। প্রায় দু’হাজার লালারসের রিপোর্ট এখনও পৌঁছয়নি কোচবিহারে। বর্তমানে পঞ্চাশ জনের বেশি বাসিন্দার লালারস না পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে চট করে ওই বাসিন্দাদের লালারস পরীক্ষা করাও সম্ভব নয়। তার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ এবং প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক পবন কাদিয়ান। বুধবার দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলা পরিষদের সভাপতি এবং সদস্যদের নিয়েও একটি বৈঠক হয়। বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “কোচবিহারকে গ্রিন জ়োন রাখাই আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে। বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। তাতে আমরা সফল হব।”

প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোচবিহার জেলায় এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার শ্রমিক ফিরেছেন। আরও অন্তত ৭০ হাজার শ্রমিক ফেরার অপেক্ষায়। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের একটি বড় অংশ ফিরবেন। ওই শ্রমিকদের মধ্যেই একটি অংশ রেড জ়োন থেকে ফিরবেন। ওই বাসিন্দাদের যেমন কোয়রান্টিনে রাখতেই হবে, তেমনই ভিন্ রাজ্যের অন্য বাসিন্দাদের নিয়েও গ্রামের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। আবার অনেক শ্রমিক নিজেরাই কোয়রান্টিন সেন্টারে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁদের সবাইকে কোয়রান্টিন রাখা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।

কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানিয়েছেন, ওই বিষয়ে সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই বাসিন্দাদের রাখার জন্য কমিউনিটি কোয়রান্টিন সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলার ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে হাইস্কুলে ওই সেন্টার খোলা হবে। ওই সেন্টারের দায়িত্ব থাকবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপরে। ইতিমধ্যেই ওই বিষয়ে জেলা পরিষদ নিজস্ব তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “এই মুহূর্তে ট্রেনে করে রেড জ়োন থেকে যাঁরা ফিরবেন তাঁদের আলাদা করে কোয়রান্টিনে রাখাই বড় ব্যাপার। কারণ সংক্রমণ ঠেকানোই এখন প্রধান লক্ষ্য।”

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Coochbehar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy