স্বীকারোক্তি: পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার টাকা ফেরতের মুচলেকা দিচ্ছেন। নিজস্ব চিত্র
কাটমানি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা সরগরম। এ বার তার ছোঁয়া এসে লাগালো মেখলিগঞ্জেও। কাটমানি ফেরতের দাবিতে এ দিন উত্তাল হয়ে ওঠে মেখলিগঞ্জ পুরসভা। চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঘেরাও হয়ে থাকেন তৃণমূল পরিচালিত মেখলিগঞ্জ পুরবোর্ডের বিদায়ী পুরপ্রধান মিঠু সিংহ সরকারের স্বামী তথা পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিষ্ণু অধিকারী। পরে ১২ দিনের মধ্যে টাকা ফেরতের মুচলেকা দিয়ে ঘেরাও মুক্ত হন তিনি। বিষ্ণুবাবু তৃণমূল পুর কর্মচারী সংগঠনের রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী।
ঘটনার সূত্রপাত মেখলিগঞ্জ পুরসভার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার হাউসিং ফর অল প্রকল্পকে কেন্দ্র করে। এই প্রকল্পে যাঁরা ঘর করতে চেয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে অভিযোগে বিষ্ণুবাবুকে এ দিন ঘেরাও করা হয়। পরে বেনিফিশিয়ারিদের এই আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়ায় বিজেপি। দলের মেখলিগঞ্জ শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশেকার রহমান বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে মেখলিগঞ্জ পুর এলাকায় যাঁরা সরকারি ঘর পেয়েছেন, তাঁদের ঘরের প্ল্যান অনুমোদনের জন্য মেখলিগঞ্জ পুরসভা ২ হাজার করে টাকা নিয়েছে। কিন্তু মাত্র ১০০ টাকার রসিদ দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।’’ তা ছাড়া, তৃণমূল পুরবোর্ড চলাকালীন পুরপ্রধানের স্বামী হিসেবে বিষ্ণুবাবু সমস্ত বিষয় দেখাশোনা করতেন। আশেকার বলেন, ‘‘তাঁর নির্দেশই এই টাকা তোলা হয়েছে। সে কারণে বিষ্ণুবাবুকেই এই কাটমানি ফেরত দিতে হবে।’’ শুধু এই প্রকল্পেই নয়, পুরসভার একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে বিষ্ণুবাবু জড়িত বলে রাজীব সিংহ সরকার, জয়দীপ নন্দী, ভাইয়া গুহ, সুদীপ্ত গুহ প্রমুখ বিজেপি নেতারাও অভিযোগ করেন। বেলা ১২টা থেকে চলা এই কর্মসূচিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে মেখলিগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষ পর্যন্ত দুই হাজার করে টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে লিখিত ভাবে জানান।
টাকা ফেরতের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। এ বিষয়ে বিজেপি নেতা দধিরাম রায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মডেল রয়েছে। বেনিফিশিয়ারিদের কাছে প্ল্যান অনুমোদন করানোর জন্য কোনও টাকা নিতে পারে না পুরসভা। সে কারণে যে ভাবে পুরপ্রধানের স্বামীর নেতৃত্বে পুরসভা প্রায় চারশো বেনিফিশিয়ারির টাকা লুঠ করেছে তার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন চালাবে বিজেপি।’’
বিষ্ণুবাবু বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাকে হেনস্থা করতেই এই কাজ করেছে বিজেপি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের বক্তব্য, ‘‘খোঁজ নিচ্ছি। কেউ দোষ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy