মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বছর তিনেক আগে যে ছবি দেখা যেত শিলিগুড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথে নামলে, তা-ই যেন ফিরে এল শুক্রবারের মিছিলে।
সংগঠনের জোরে হাজার পঞ্চাশেক লোক এ দিন যোগ দিয়েছে মিছিলে। মৈনাক অতিথি নিবাসের সামনে তৈরি মঞ্চ থেকে যখন মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখনও বাইরে থেকে লোক ঢুকছিল শহরে। কিন্তু আসল ছবিটা দেখা গেল মমতা পথে নামার পরে। তাঁর পিছনে এক দিকে গৌতম দেব, পার্থপ্রতিম রায়, অন্য দিকে একটু দূরে সৌরভ চক্রবর্তী। মোড় মোড়ে উড়ে আসছে পাপড়ি। তার পরেই দেখা যায়, রাস্তার দু’পাশে দোকান বাজার থেকে যে উৎসাহীরা বার হয়ে এসেছিলেন মিছিল দেখতে, স্লোগানের তালে তালে হাততালি দিতে দিতে তাঁদেরও অনেকেই ঢুকে পড়েন মিছিলে। এক তৃণমূল কর্মী তাঁর পাশের লোকটিকে ঠেলে দেখান সেই দৃশ্য। পরে তৃণমূলের এক নেতাও জানান, এ দিন প্রচুর মানুষ মূল মিছিলে ঢুকতে পারেননি। বদলে হিলকার্ট রোডের অন্য দিক দিয়েই একটি সমান্তরাল মিছিল শুরু করে দেন তাঁরা। মিছিলের সাড়ে তিন কিলোমিটার রুটেই রাস্তার ধারে আমজনতা, ব্যবসায়ীরা দুহাত তুলে সমর্থন জানান মমতাকে।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোট ছাড়া শিলিগুড়ি সব বারই নিরাশ করেছে তৃণমূল নেত্রীকে। এ বারেও লোকসভা ভোটে এই শহর থেকে পিছিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। এ বছরই শিলিগুড়িতে পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের ভোট। পরের বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে এ দিনের মিছিল যে ব্যতিক্রমী ছবি দেখাল, তা মানছেন বিরোধী নেতারাও। আর মিছিলে লোক দেখে তৃণমূল নেতাদের দাবি, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দলের আন্দোলন ঠিক পথেই এগোচ্ছে। তাঁরা এ-ও দাবি করেন, এই জনসমর্থন আগামী পুরভোট বা মহকুমা পরিষদের ভোট পর্যন্ত বজায় থাকলে উত্তরবঙ্গেও দ্রুত বেগ পেতে হতে পারে বিজেপিকে।
কত লোক হয়েছিল এ দিন? তৃণমূল দাবি করেছিল, তারা এক লক্ষের জমায়েত করবে। কিন্তু বাস্তবে তা যে সম্ভব নয়, সেটা তৃণমূল নেতারা জানতেন। ঘরোয়া আলোচনায় তাঁরা জানিয়েছিলেন, হাজার পঞ্চাশেক লোক হলেই যথেষ্ট। পুলিশের হিসেবে সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারে পৌঁছেছে। এবং তা সম্ভব হয়েছে রাস্তার পাশ থেকে সাধারণ পথচারীদের মিছিলে যোগ দেওয়ার ফলেই, বলছেন তৃণমূল নেতারা।
স্বাভাবিক ভাবেই খুশি মমতা। মিছিলের পুরো রাস্তাটিই তিনি কাঁসর বাজান। আমরা কারা? নাগরিক— স্লোগানটিতে ভরিয়ে তোলেন মিছিল এবং বাঘাযতীন পার্কের মঞ্চও।
সকাল থেকেই সাজ সাজ রব ছিল শিলিগুড়িতে। একে একে মাল্লাগুড়িতে আসেন পাহাড়ের মানুষ। ঢাকঢোল, তাসা নিয়ে হাজির হয় সমতলের একাধিক মিছিল। রাজবংশী, পঞ্জাবি, বিহারি, মুসলিম, আদিবাসী মিলিয়ে ভিড় বাড়তে থাকে। সেই জমায়েতের প্রতি মমতা বলেন, ‘‘রাজ্য এনআরসি হতে দেব না। কাউকে কোথাও যেতে হবে না।’’
মিছিল শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিনের মিছিলে শহরের ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশও হাজির ছিলেন। এটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিলিগুড়ির মানুষ এনআরসি চায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy