বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে। মঙ্গলবার চালসায়। —নিজস্ব চিত্র।
রাসায়নিক কীটনাশক ব্যববার নিয়ে চা পর্ষদের নতুন নিয়মে ‘ভুক্তভোগী’ ছোট চা চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। চা পর্ষদের নতুন নির্দেশ, তৈরি চায়ের নমুনায় রাসায়নিক কীটনাশকের উপস্থিতি মিললেই উৎপাদিত সেই পুরো চায়ের পরিমাণ বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং কারখানার লাইসেন্সও বাতিল হবে।
১ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। তার পর থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষ ছোট চা বাগানের পাতা নেওয়ার আগে, রাসায়নিক কীটনাশক নেই এমন শংসাপত্র চাইছেন। ছোট চা বাগানের চা পাতার নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই। অন্যত্র নমুনা পাঠিয়ে সময় এবং ব্যয়সাপেক্ষ সে প্রক্রিয়া নিয়মিত ভাবে চালু করাও তাদের ‘অসাধ্য’ বলে দাবি। তার ফলে, সোমবার বহু কারখানা পাতা নেয়নি। এই সমস্যার কথা মঙ্গলবার চালসার হোটেলে গিয়ে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপা। সূত্রে দাবি, তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পাশে থাকার বার্তা দেন এবং বিজেপিকেও নিশানা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আচমকা ভোট ঘোষণার পরে নির্দেশ জারি করে চা পাতা কেনা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। এক দিকে, বন্ধ বাগান খুলতে পারছে না। অন্য দিকে, ভোট ঘোষণার পরে ছোট ছোট চা বাগানের মালিকদের অসহায় করে দিচ্ছে। ১০ লক্ষ মানুষ এই ছোট চা বাগান করে সংসার চালায়। ওই চা পাতায় নাকি রাসায়নিক সার দেওয়া আছে। তা হলে সেটা আগে বলাই উচিত ছিল। তা হলে তাঁরা অন্য পেশার কাজ করতেন। এত দিন পরে মনে পড়ল! ভোট মিটলে বিষয়টি আমি নিজে দেখব।”
এ দিকে চা পর্ষদের নয়তুন সিদ্ধান্তে ছোট চা বাগানের পাতা কেনা প্রায় বন্ধের মুখে। চা শ্রমিক সংগঠনগুলিও সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে আরও কিছুটা সময় চেয়েছে। কারখানা মালিকরাও ধর্মঘটে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। চা পর্ষদ সূত্রের খবর, আরও কিছু সময় দেওয়া যায় কি না, তা বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য কেন্দ্রীয় সংস্থার উপরে চাপ বাড়াল বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় অবশ্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সবেতেই রাজনীতি খোঁজেন। কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীর স্বাস্থ্য এবং চা শিল্প— দুয়েরই চিন্তা করে।”
এ দিকে মঙ্গলবার পাহাড়-ঘেঁষা গির্জায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সার্বিক উন্নতি ও সুস্বাস্থ্যের কামনায় প্রার্থনাসভা বসল। প্রার্থনা-মন্ত্রে গলা মেলালেন উপস্থিত সকলে। ছিলেন ধর্মযাজকেরাও। প্রার্থনা সভায় নিজেও ‘বিশ্বপিতা তুমি হে প্রভু’ গান শোনালেন মমতা।
গির্জায় ওই প্রার্থনা-সভায় ভোট-প্রচার তাঁর উদ্দেশ্য নয় বলে মন্তব্য করেন মমতা। তবে সেই সভাতেও কেন্দ্রীয় সরকারকে আবাস যোজনার টাকা না দেওয়া নিয়ে নিশানা করেন মখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, মে মাস পর্যন্ত ওই খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা না মিললে রাজ্য সরকারই উপভোক্তাদের জন্য ঘর তৈরি করে দেবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ কথা আজ প্রথম বার নয়, নির্বাচন ঘোষণার আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম।’’পরে গির্জা লাগোয়া এলাকার একটি বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে সেখানকার আবাসিকদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা। সাংবাদিকদের তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে এ দিন অনীত থাপার বৈঠক হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, ঝড়-বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলি নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি।
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘ভোটের মুখে ডুয়ার্সের গির্জায় মুখ্যমন্ত্রী কেন গিয়েছেন, তা প্রত্যেকেই বুঝেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy