রাস্তা-জুড়ে: ধর্মঘটের ডাক দিয়ে পথে নামলেন বাম ও কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। মালদহে। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলির ডাকে আজ বুধবার বন্ধ। তার সমর্থনে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের যৌথ মিছিল ও সভায় গত কয়েক দিন ধরেই সরগরম মালদহ। মঙ্গলবারও মালদহ জেলা সদর সহ বিভিন্ন প্রান্তে বন্ধের সমর্থনে মিছিল করে তারা। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার জেলা জুড়ে বন্ধ করতে মরিয়া তারা। কিন্তু রাজ্য সরকার বন্ধের বিপক্ষে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে, না বিপর্যস্ত হবে তা নিয়ে মালদহ জেলা জুড়ে জোর প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে।
মালদহ জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দল বন্ধের বিরোধী। তবে পথে নেমে বিরোধিতা কিছু করা হবে না। দক্ষিণ দিনাজপুরেও তৃণমূল জানিয়েছে, মানুষ যদি স্বেচ্ছায় বন্ধে শামিল হন, তা হলে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘যদি কেউ জবরদস্তি করে দোকানপাট বন্ধ রাখতে চায় তা হলে তাকে তৃণমূল বাধা দেবে। স্বেচ্ছায় না চাইলে এখানে কোনও ধর্মঘট হয় না।’’
তিন জেলারই প্রশাসনিক সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, বুধবার সমস্ত সরকারি অফিস, স্কুল, কলেজ খোলা থাকবে, সরকারি বাস চলবে। পুলিশ জানিয়েছে, বন্ধে সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হবে। কেউ জোর করে অফিস-আদালত বন্ধ করতে এলে পদক্ষেপ করা হবে। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশের পাশাপাশি অন্য জেলা থেকেও বাড়তি পুলিশ মালদহ জেলায় নামানো হবে।
এনবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সরকারি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করবে। এদিকে মালদহ জেলা বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রশাসন জেলার সমস্ত রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বলেছে। আমরা বাসকর্মীদের বিষয়টি জানিয়েছি। তবে বাসকর্মীরা বাস চালাবে কিনা সেটা তাঁদের সিদ্ধান্ত।’’ সূত্রে খবর, বুধবার বন্ধে মালদহের বেশিরভাগ বাজার ও দোকানপাট সম্ভবত বন্ধ থাকবে। মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন, ‘‘প্রশাসন দোকানপাট খোলা রাখতে অনুরোধ করেছে। আমরা ব্যবসায়ীদের তা জানিয়েছি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলবেন কিনা সেটা তাদের সিদ্ধান্ত।’’
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘সরকার চাইছে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে। ফলে জোর করে কোথাও অফিস-আদালত স্কুল বা কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে গেলে পদক্ষেপ করা হবে। জেলায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হবে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকেও কিছু পুলিশ আনা হয়েছে।’’
মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বেসরকারি পরিবহণের বাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রশাসন। সেখানে সংগঠনকে প্রতি দিনের মতো বাস চালানোর জন্য প্রশাসন নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাসও প্রশাসন দিয়েছে। বালুরঘাট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মানস চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রশাসন নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে। তাই আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে বাস চালানো হবে। তবে কোথাও কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে বাস তুলে নেওয়া হবে।’’ জেলার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি। সংগঠনগুলি জানিয়েছে, ধর্মঘটের সময়ে কোনও ভাঙচুর হলে সেই ক্ষতিপূরণ কেউ দে য়না। তাই ব্যবাসীয়ার নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবেন, দোকান খুলবে না বন্ধ রাখবে।
উত্তর দিনাজপুরে এনবিএসটিসি ডিপোর ওসি সুমিত ভৌমিক বলেন, সরকারি নির্দেশে বুধবার রায়গঞ্জ ডিপো থেকে লোকাল ও দুরপাল্লার সমস্ত রুটের সরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে। বন্ধ সমর্থনকারীদের হামলার আশঙ্কায় এ দিন চালকদের হাতে হেলমেট তুলে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল প্রভাবিত নিগমের চালক ও শ্রমিক সংগঠনের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কৌশিক দে বলেন, ‘‘পুলিশের নজরদারিতে নিগমের সমস্ত ডিপো থেকে লোকাল রুটের বাস চলাচল করবে।’’ তবে পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত সোম ও রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীর বক্তব্য, ‘‘সমস্ত বন্ধেই ব্যবসায়ীরা দোকানে ভাঙচুর ও তাঁদের উপর হামলার আশঙ্কায় দোকানপাট বন্ধ রাখেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy