মৃত: সাকের আলি। —নিজস্ব চিত্র।
আফরাজুলের মৃত্যুর মাস দেড়েকের মাথায় ফের রাজস্থানে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল মালদহের আর এক শ্রমিকের। পুলিশ জানায়, মৃত শ্রমিকের নাম সাকের আলি(৩৪)। জয়পুরে শাস্ত্রীনগর এলাকায় একটি বাড়িতে থাকতেন তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাকেরের খোঁজে গিয়ে তাঁর রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান পরিচিতরা। সঙ্গে সঙ্গেই চাঁচলে তাঁর বাড়িতে ফোন করেন তাঁরা। সাকেরকে খুন করা হয়েছে বলেই সন্দেহ তাঁর পরিজনদের।
গত ৬ ডিসেম্বর রাজস্থানেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে, গায়ে পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল মালদহের বাসিন্দা আফরাজুল শেখকে। সেই ঘটনার ভি়ডিও দেখে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। ভিনরাজ্যে কর্মরত ছেলেদের জন্য আশঙ্কার মেঘ নেমেছিল জেলার ঘরে ঘরে। বাইরের রাজ্যে কাজ ছেড়ে ঘরে ফেরার ডাক দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। এবং সে জন্য ইদানিং কাজের খোঁজে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের দীর্ঘ লাইন পড়ছে প্রশাসনিক দফতরে।
এ দিন সাকেরের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে রাজস্থান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন চাঁচল থানার আইসি সুকুমার মিশ্র। তবে সেখানে এখনও কেউ কোনও অভিযোগ না জানানোয় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে রাজস্থান পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজস্থান পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে তারা জানিয়েছে।’’
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাকেরের স্ত্রী ও বছর এগারোর একটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় কয়েক বছর আগেই মেয়েকে নিয়ে চলে যান স্ত্রী। এখন তিনি মুম্বইতে থাকেন। স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে চলে যাওয়ার পরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। প্রচণ্ড মদ্যপান শুরু করেন বলেও তার পরিচিতরা জানিয়েছেন। বছর পাঁচেক আগে কাজের খোঁজে রাজস্থানে গিয়েছিলেন সাকের। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। সেখানে তিনি কখনও নির্মাণ শ্রমিকের, কখনও ডেকোরেটর্সের শ্রমিকের কাজ করতেন। মঙ্গলবার সাকেরের পরিচিত চাঁচলেরই কয়েকজন শ্রমিক তাঁর খোঁজে গিয়ে ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। এরপরেই বাড়িতে ফোন করার পাশাপাশি তাঁর দেহের ছবিও পাঠান। এবং এই ছবি দেখেই পরিজনদের সন্দেহ তাঁকে খুন করা হয়েছে।
ছয় ভাইবোনের মধ্যে সাকের তৃতীয়। বাড়িতে রয়েছেন বাবা ও মা। ভিনরাজ্যে ছেলের মৃত্যুর কথা জেনে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। মা ওবেদা বিবি বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে ও ফোন করে খোঁজ খবর নিত। স্ত্রী ও মেয়ে তাকে ছেড়ে যাওয়ার পর ভেঙে পড়েছিল। তবে ওকে কারা কেন খুন করল সেটাই বুঝতে পারছি না।’’ সাকেরের এক আত্মীয় মনজুর আলম বলেন, ‘‘শুক্রবার দেহ বাড়িতে আসার কথা। স্থানীয় শ্রমিকরাই দেহ বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছেন। রাজস্থান প্রশাসন কোনও সাহায্য করেনি।’’ বৃহস্পতিবার মালদহ উত্তরের সাংসদ মৌসম বেনজির নুর সাকেরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা-বাবার সঙ্গে দেখা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy