টাকা জমা দেওয়ার মেয়াদ ফুরোনোর পনেরো দিন পেরোলেই নোটিস ধরানো হয়। চিঠি পাঠিয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের হুমকিও দেওয়া হয়। সরাসরি তলব করা হয় সংস্থার মালিককে। তাতে কিছু টাকা উদ্ধার হলেও এখনও প্রায় ২০ শতাংশ চা বাগান শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) টাকা জমা করেনি। তরাইয়ের চা বাগানগুলি নিয়ে তাও উদ্বেগ কাটছে না প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতরের।
একটি নামী সংস্থার ১০টি চা বাগানের শ্রমিকদের খাতে পিএফের টাকা জমে পড়েনি। বকেয়ার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে এতটাই বিপুল হয়ে যায় যে সংস্থা জানিয়ে দেয় তাদের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব নয়। সংস্থার বাগানগুলির ভবিষ্যৎ পুরোপুরি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিলিগুড়ির আঞ্চলিক পিএফ দফতরের কমিশনার মনোজ কুমার বলেন, ‘‘বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে না পেরে বাগান বন্ধ গিয়েছে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। তেমন ঘটনা রুখতেই আমরা কড়াকড়ি করছি। এখনও অনেক বাগানের বকেয়া রয়েছে। সেগুলো আদায় করতেও কড়া পদক্ষেপ হচ্ছে।’’
শিলিগুড়ির পিএফ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অনাদায়ী পিএফের পরিমাণ প্রায় ২৫ কোটি টাকা। বছর কয়েক আগে এই বকেয়ার পরিমাণ ৫০ কোটিরও বেশি ছিল। দফতর সূত্রে দাবি, সম্প্রতি পুরো হিসেব ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে। সে কারণে কোনও মাসের ১৫ তারিখ পেরিয়ে গেলেই কোনও চা বাগান সংস্থা শ্রমিকদের পিএফের টাকা বকেয়া রেখেছে তার তালিকা পাওয়া যায়। এতদিন খাতায় কলমে এই হিসেব কষতে হতো। যার জেরে কোনও সংস্থার পিএফের টাকা বকেয়া রয়েছে কি না, তা জানতেই কয়েক মাস লেগে যেত। ডিজিটাল ব্যবস্থা শুরু হওয়ার পরে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে।
বকেয়ার তালিকা পাওয়ার পরেই নোটিস দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। গত একবছরে ৪টি বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। গত সপ্তাহেই একটি চা বাগান সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিজয়নগর এলাকার ওই বাগানটি নিয়মিত শ্রমিকদের টাকা জমা করছিল না বলে অভিযোগ। বকেয়া পরিশোধ না করলে মালিক সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, গ্রেফতার করার মতো পদক্ষেপ করে। পিএফ কমিশনারের কথায়, ‘‘আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল শ্রমিকদের পিএফ অ্যাকাউন্টে যাতে যথাযথ অর্থ জমা থাকে। না হলে অবসরের পরে সেই শ্রমিক তো কিছুই পাবেন না।’’
তরাইয়ের একটি চা মালিকদের সংগঠনের সচিবের কথায়, ‘‘সব সদস্য বাগানকে নিয়মিত পিএফের টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ-সুপারিশ আমরা করি। তারপরেও যদি কোনও সংস্থা বকেয়া রাখে, তবে সেই দায় তাদের ব্যক্তিগত।’’ কিছু শ্রমিক সংগঠন এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করছে। তাদের বক্তব্য, কড়া পদক্ষেপই দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy