Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মিড-ডে মিল খাচ্ছে কুকুর

এই পরিস্থিতিতে ছাত্রের তুলনায় বেশি মিডডে মিল রান্না দেখিয়ে বা অন্য কোনও ভাবে আর্থিক দুর্নীতি চলছে কি না তা নিয়েও প্রশাসনিক তদন্তের দাবি তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪
Share: Save:

স্কুলের মাঠে প্রতিদিনই ফেলা যাচ্ছে মিড-ডে মিলের ভাত, ডাল, তরকারি। সেই খাবার চেটেপুটে খাচ্ছে একদল কুকুর। অভিযোগ উঠেছে, স্কুল কর্তৃপক্ষের ঔদাসীন্যের জন্যই খাবারের এই হাল। পড়ুয়াদের একাংশ সেই সব খাবার নষ্ট করায় সরকারি টাকাও অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ ব্লকের রামপুর পঞ্চায়েতের রামপুর ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে।

উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘অভিযোগ আমিও শুনেছি। প্রশাসন মিডডে মিলের খাবার নষ্টের ছবিও সংগ্রহ করেছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। সেই রিপোর্ট হাতে আসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলাশাসকের দাবি, কয়েক মাস আগে জেলার সমস্ত হাইস্কুলের মিডডে মিল রাঁধুনিদের উন্নত মানের খাবার তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে মিডডে মিল রান্না করা হবে ও কী কী পদ থাকবে, সেই ব্যাপারে প্রতিটি স্কুলকে একটি করে বই পাঠিয়ে উপযুক্ত নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তার পরেও খাবার নষ্টের জেরে সরকারি টাকা অপচয়ের ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না প্রশাসন।

স্কুলের প্রধানশিক্ষক তরুণ নায়েকের অবশ্য দাবি, কিছু পড়ুয়া নিয়মিত মিডডে মিলের খাবার নষ্ট করে। সাফাইকর্মীরা সেগুলি ডাস্টবিনের বদলে ভুল করে খোলা মাঠে ফেলছেন। এই সুযোগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে স্কুলের বদনাম রটানোর চেষ্টা হচ্ছে। নিম্ন মানের খাবার ও সেগুলি নষ্ট করে সরকারি টাকা অপচয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

স্কুল সূত্রের খবর, ওই স্কুলে প্রতিদিন পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রায় ১৪০০ জন পড়ুয়ার মধ্যে গড়ে ৬০০-৮০০ জন মিডডে মিল খায়। পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে পড়ুয়াদের মধ্যে নিম্ন মানের মিডডে মিলের খাবার বিলি করা হচ্ছে। পড়ুয়াদের দীর্ঘ দিন অন্তর ডিমের পদ খাওয়ানো হয়। ডাল ও তরকারি মুখে দেওয়ার অযোগ্য বলে অভিযোগ। তার জেরে পড়ুয়াদের একাংশ প্রতিদিন সেই খাবার নষ্ট করছে। শিক্ষকদের একাংশের দাবি, স্কুলের মিডডে মিলের তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন নিম্ন মানের মিডডে মিলের খাবার তৈরি করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রের তুলনায় বেশি মিডডে মিল রান্না দেখিয়ে বা অন্য কোনও ভাবে আর্থিক দুর্নীতি চলছে কি না তা নিয়েও প্রশাসনিক তদন্তের দাবি তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ।

বিজেপির জেলা সহ সভাপতি পবিত্র চন্দ, রায়গঞ্জ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি লিয়াকত আলি ও জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অপূর্ব পাল প্রত্যেকেই একই সুরে দাবি করেছেন, মিডডে মিলের রান্না নিম্ন মানের না হলে পড়ুয়ারা সেগুলি নষ্ট করত না। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি ও সরকারি টাকা অপচয়ের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

অন্য বিষয়গুলি:

midday meal Low Quality Food
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE