মাটিগাড়ায় মিছিলে জোটের প্রার্থী শঙ্কর মালাকার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
এ বার বিরোধী জোটের বুথ কমিটিও তৈরি হল শিলিগুড়িতে। রবিবার সকালে সিপিএম নেতাদের নিয়ে মিছিলে বেরিয়েছিলেন শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্কর মালাকার। মিছিলের শেষে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঢুকে পড়লেন সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিসে। আগামী প্রচার কর্মসূচিগুলিতে সমন্বয় বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়, শঙ্করবাবু জানিয়ে দেন দুই দলের স্থানীয় নেতারা বসে আলোচনা করবেন। সেই আলোচনাকে একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সিপিএমের সভাধিপতি তাপস সরকার, সিপিএম নেতা ভবেন্দু আচার্যরা প্রস্তাব দেন বুথ স্তরে যৌথ কমিটি হোক। রবিবার সকালেই গঠিত হয়েছে যায় মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিভিন্ন বুথে জোটের যৌথ কমিটি।
রাজ্যে যে বিরোধী জোট তৈরি হয়েছে, শিলিগুড়ি-ই তার পথ দেখিয়েছি বলে ডান-বাম নেতাদের অনেকেই দাবি করেন। গত বছরের শিলিগুড়ি পুরসভা নির্বাচনে ভোট লুঠ রুখতে বুথ স্তরে বিরোধী সব দলের কর্মী-সমর্থকদের একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। সে সময়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধী বাম কংগ্রেসের নিচুতলার সমর্থকদের জোট বাধা ‘শিলিগুড়ি মডেল’ বলেই রাজ্য রাজনীতিতে চর্চিত হয়। পুরসভায় তৃণমূলকে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন অশোকবাবু। পুরভোটের কয়েক মাস পরে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটেও ফের জোটের কথা শোনা যায় অশোকবাবু ও শঙ্করবাবুদের মুখে। সে বারেও মহকুমা পরিষদে বামাদের জয়কে ‘শিলিগুড়ি মডেলে’র সাফল্য বলেই দাবি করেছিল বিরোধীরা। মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি হন তাপস সরকার। এ দিন সকালে শঙ্করবাবু-তাপসবাবুরা বসে বিরোধী জোটকে একেবারে নিচুতলায় পৌঁছে দিতে বুথ স্তরেও জোট গড়ে দিলেন।
রবিবার সকালে মাটিগাড়ায় পদযাত্রা ছিল কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্করবাবুর। পদযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন সিপিএম নেতা-কর্মীরাও। মাটিগাড়া মোড়ের সামনে এসে পদযাত্রা শেষের পরে টোটোয় বাঁধা মাইকে বক্তব্যও রাখেন শঙ্করবাবু। বক্তৃতার শেষে মাইক ছাড়ার সময়ে পাশে দাঁড়ানো সিপিএমের মাটিগাড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক নিমাই চক্রবর্তী শঙ্করবাবুর কানে কানে কিছু বলেন। শঙ্করবাবু তারপরে ফের মাইক ধরে সকলকে জানান, আগামীকাল মনোনয়নের মূল মিছিল শুরু হবে শিলিগুড়ির হাসমিচকে কংগ্রেস পার্টি অফিসের সামনে থেকে। তার আগে দু’দলের সমর্থকরা জড়ো হবেন মাটিগাড়ায় সিপিএম অফিসের সামনে। বক্তৃতা-মিছিলের শেষে শঙ্করবাবু সোজা ঢুকে যান পাশেই সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিসে। গাড়ি থেকে নামিয়ে আনেন সিপিএমের ঝান্ডার প্যাকেট। মাটিগাড়ায় আসার পথে কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্করবাবুই সিপিএমের পতাকা কিনে এনেছেন। কবে, কখন প্রচার ঠিক করার জন্য বুথে যৌথ কমিটি তৈরির সিদ্ধান্তের পরে, ঠিক হয় বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী বুথও হবে জোটের নামে। কংগ্রেস প্রার্থীর নির্বাচনী বুথ উদ্বোধনের ভার স্থানীয় সিপিএম নেতাদের দেওয়া হয়। শঙ্করবাবুর কথায়, ‘‘জোটে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলছে। সে কারণে জোটকে বুথ স্তরে পৌঁছে দিতে কমিটি গড়া হয়েছে। এতে প্রচারেরও সুবিধে হবে।’’
সিপিএম নেতা তথা মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপসবাবুর কথায়, ‘‘কিছু দিন আগেও কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। এখন সকলেই জোটের মিছিলে আসছেন। জোটকে আরও শক্তিশালী করতেই বুথে বুথে কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত।’’
গত পুরসভা ভোটে তৃণমূল বিরোধী বুথ স্তরে অলিখিত জোট বা সমঝোতার রাস্তা দেখিয়েছিল শিলিগুড়ি মডেল। এবার বিরোধী জোট বা সমঝোতার সেই মডেলকে যৌথ কমিটি গড়ে বুথ স্তরে পৌঁছে দেওয়ার সূচনাও হল শিলিগুড়িতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy