Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

আসন ছেড়ে জোটরক্ষা কংগ্রেস ও বামেদের

মিছিলের সামনের সারিতে পাশাপাশি এগোচ্ছেন দু’জন। এক জন সিপিএমের জোনাল সম্পাদক নন্দলাল হাজরা। অন্য জন কংগ্রেস প্রার্থী গৌতম দাস। ক’দিন আগেও ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের’ দিকে এগোচ্ছিলেন তাঁরা।

নন্দলালবাবুর (বাঁ দিকে) হাতে কংগ্রেসের পতাকা ও (ডান দিকে) গৌতমবাবুর হাতে সিপিএমের পতাকা। — নিজস্ব চিত্র

নন্দলালবাবুর (বাঁ দিকে) হাতে কংগ্রেসের পতাকা ও (ডান দিকে) গৌতমবাবুর হাতে সিপিএমের পতাকা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২১
Share: Save:

মিছিলের সামনের সারিতে পাশাপাশি এগোচ্ছেন দু’জন। এক জন সিপিএমের জোনাল সম্পাদক নন্দলাল হাজরা। অন্য জন কংগ্রেস প্রার্থী গৌতম দাস। ক’দিন আগেও ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের’ দিকে এগোচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিনেই সব সমস্যা কেটে যায় পারস্পরিক বোঝাপড়ায়। আর তার পরে এই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রচার, যাকে বাম ও কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা বলছেন, ফেবিকুইক জোট!

জোটের এই জোর কদমে প্রচারের পিছনে কিন্তু দু’পক্ষের সমঝোতার গল্প। গঙ্গারামপুর আসনটি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে বাকি আসনগুলিতে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় বামফ্রন্ট। তাতে কিছুটা অসন্তুষ্ট জেলা কংগ্রেস অন্য আসন চেয়ে অনড় হয়ে বসেছিল। হরিরামপুরে তারা প্রার্থীও ঘোষণা করে দেয়।

এ দিকে গঙ্গারামপুরে নন্দলালকে প্রার্থী করে সিপিএম। ফলে দুই কেন্দ্রেই লড়াইয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়। তখনই চাপ বাড়তে থাকে নিচুতলা থেকে। শেষে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন হরিরামপুরে লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান কংগ্রেস প্রার্থী। ফলে গঙ্গারামপুর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন নন্দলাল। এই কেন্দ্রে জোটের প্রার্থী হিসেবে রয়ে গেলেন কংগ্রেসের গৌতম। তাঁকে নিয়েই এ দিন বিপুল মিছিলে বার হন নন্দলাল।

২০১১ সালে এই আসনে নন্দলালকে হারিয়েই বিধানসভায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের সত্যেন রায়। এ বার তিনি অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। এতটাই যে, সম্প্রতি জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে অভিনব অভিযোগও জানিয়ে এসেছিলেন— বিরুদ্ধ গোষ্ঠী তাঁর বদলে সিপিএমকে ভোট দিতে বলছে! এই অবস্থায় একটাই খড়কুটো ধরে রয়েছেন তিনি। সেটা হল, আগামী ১০ এপ্রিল গঙ্গারামপুরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার।

যদিও সেই প্রচারকে আর বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নয় বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এখন এক দিকে জোটের জোর প্রচার, অন্য দিকে সারদা থেকে নারদে হালে পানি না পাওয়া তৃণমূল নেতৃত্ব। ফলে মানুষই বুঝে নেবেন, কে এগিয়ে কে পিছিয়ে। এবং আসল জবাবটি ১৭ তারিখ বাক্সবন্দি করে দিয়ে দেবে। সেখানেই লেখা থাকবে শাসক দলের বিদায় বার্তা! সত্যেনবাবু অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু খোদ তৃণমূলের অন্দরেই এখন সংশয় যথেষ্ট, শেষ রক্ষা হবে তো?

এ দিন জোটের মিছিল নিঃসন্দেহে সত্যেন রায়ের কপালের ভাঁজ আরও বাড়িয়ে দিল। বিশেষ করে মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরের দিন থেকে যে ভাবে জোটের প্রচারে গতি আসছে, তাতে চিন্তা বাড়াটাই স্বাভাবিক, বলতে শুরু করেছেন তৃণমূলেরও অনেকে। এর মধ্যেই সিপিএম জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস থেকে এক ঝাঁক বাম নেতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সঙ্ঘবদ্ধ লড়াই শুরু করেছেন কংগ্রেস জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায় থেকে শুরু করে গোটা দলটাই। এ দিন নন্দলাল ও গৌতমের হাত হাত ধরে মিছিল করার মধ্যে দিয়ে আরও এক বার সেই ছবিটাই স্পষ্ট হয়ে গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Left Front Congress alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy