প্রতিবাদ: জ্বরের চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল। এই অভিযোগে প্রতিবাদ শিলিগুড়িবাসীদের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
ফের জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে এক রোগিণীর মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। মঙ্গলবার বেলা ১টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা খুকু মাহাতো (৫০)। সোমবার রাতে শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি নার্সিংহোম থেকে তাঁকে মেডিক্যালে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকেরা। জ্বর ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে তিন দিন ওই নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন তিনি। পরিবারের লোকের অভিযোগ, খুকুদেবীর ডেঙ্গি হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গিয়েছিল। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানোর পর সোমবার রাতে চিকিৎসকরা ভাল ভাবেই দেখেছেন। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে আর কোনও চিকিৎসক তাঁকে দেখেননি বলে অভিযোগ।
মেয়ে ঝুমকিদেবীর অভিযোগ, ‘‘নার্সিংহোমে চিকিৎসা খরচসাধ্য। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভাল চিকিৎসকরা রয়েছেন শুনেছি। সেই ভরসাতেই এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে বুঝলাম চিকিৎসা পরিষেবা মেলাই দায়। মার শরীর থেকে এ দিন সকালে নল খুলে গেলে বারবার চিকিৎসককে খবর দিয়েছিলাম। কেউ আসেননি। অনেক পরে এক জুনিয়র চিকিৎসক এসে ঠিক করে দেন।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ঝুমাদেবীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে তাঁদের কাছে কেউ অভিযোগও জানায়নি। শহরে জ্বর ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার তাদের ৩ জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।
এ দিন শিলিগুড়ি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শিশু শিক্ষার সঙ্গে যু্ক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে দাবি করা হয় তাদের এলাকায় জ্বর ও ডেঙ্গিতে অন্তত সাড়ে চারশো জন বাসিন্দা আক্রান্ত। ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য তা মানতে নারাজ। সংগঠনের সম্পাদক বিজয় বিশ্বাস, সভাপতি নুরুল ইসলামরা জানান, তাঁদের এক সদস্য আশা শর্মা ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন সপ্তমীর দিন। তার পরই তারা এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। বিস্তারিত জানিয়ে দ্রুত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে চিঠি দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসক, পুরসভা সবাইকে জানাবেন।
নুরুলবাবু, বিজয়বাবুদের দাবি, শহরের মেয়র, কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য দফতর সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু তারা তা পালন করছে না। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিখিল সাহানির দাবি, ‘‘ওই ওয়ার্ডে এখনও ডেঙ্গিতে কেউ মারা যায়নি। ওই সংস্থার লোকজন নানা ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘ওই সংস্থার কাছে তথ্যপ্রমাণ থাকলে তাঁরা তা জানাতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy