কালিয়াচকের সেই বাড়ি এখন প্রতিবেশীদের কাছে আতঙ্কের। নিজস্ব চিত্র
পাড়ার মাঝে হঠাৎ যে একটা ‘ভুতুড়ে বাড়ি’ গজিয়ে উঠবে তা ভাবেননি কেউ। কালিয়াচক-কাণ্ডের পাণ্ডা মহম্মদ আসিফের বাড়ির পাশে বিসদৃশ ওই নির্মাণই এখন মূর্তিমান ‘আতঙ্ক’ হয়ে উঠেছে প্রতিবেশীদের কাছে। গত ১৯ জুন ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় আসিফের বাবা, মা, বোন এবং ঠাকুমার লাশ। আসিফের প্রতিবেশীরা চাইছেন, তদন্তের পর ওই বাড়ি ভেঙে ফেলা হোক।
আসিফের মূল বাড়ির পাশে গুদামের মতো রহস্যে মোড়া ওই নির্মাণ। পাঁচিল দুর্গের মতো। উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট। লম্বায় আনুমানিক ৫০ ফুট এবং চওড়া প্রায় ৪০ ফুট। ওই বাড়ির কোনও ছাদ নেই। রয়েছে একটি বারান্দা। কিন্তু বারান্দায় পৌঁছনোর কোনও সিঁড়ি নেই। রয়েছে একটি মাত্র দরজা। এ ছাড়া কোনও জানালা বা ভেন্টিলেটর নেই। বাড়ির ভিতরও অদ্ভুতদর্শন। সেখানকার নকশা দেখে মনে করা হচ্ছে ভিতরে ঘর এবং রান্নাঘর তৈরির পরিকল্পনা ছিল আসিফের। ওই গুদামের ভিতরে চৌবাচ্চার আকারের কয়েকটি গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। সেখানে পাওয়া যায় চারটি পচাগলা দেহ। এই ঘটনার পর থেকেই পাড়ার ভিতরের ওই নির্মাণ প্রতিবেশীদের কাছে ‘ভুতুড়ে বাড়ি’ হয়ে উঠেছে।
আসিফের বাড়ি থেকে কয়েক মিটার দূরেই থাকেন জুয়েল বিবি। তিনি বলেন, ‘‘আগেও ওই বাড়ির দিকে তাকানো ছিল পাপ। মহা অপরাধ! বাড়ির পাঁচিলে লাগানো সিসি ক্যামেরায় যদি কাউকে বাড়ির দিকে তাকাতে দেখত আসিফ, তবে ও গালিগালাজ করত। জানে মেরে দেওয়ার হুমকিও দিত। আর এখন, রাতে তো দূর অস্ত, দিনের আলোতেই ওই বাড়ির দিকে তাকাই না।’’
বাড়িটা নিয়ে আতঙ্কে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রফিক। তিনি দাবি করেছেন, ‘‘রোজ রাতে আমি দুঃস্বপ্ন দেখছি। বাড়ির বাচ্চারাও তীব্র আতঙ্কে রয়েছে। পুলিশের তদন্ত শেষ হলে, ওই বাড়ি ভেঙে ফেলা হোক।’’
আসিফের বাড়ির পাশের রাস্তা ধরেই এক সময় আত্মীয়দের বাড়ি যেতেন কালিয়াচকের পুরনো ১৬ মাইল এলাকারই বাসিন্দা বাবলি মণ্ডল। সেই বাবলি বললেন, ‘‘আগে ওই বাড়িটার পাশের রাস্তা ধরেই রাজনগরে আমার বাপের বাড়ি যেতাম। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকে, আর ওই রাস্তামুখো হই না। ভয় করে। ওই বাড়িটাই মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। ওই গলিপথের বদলে এখন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরি।’’
কিছু দিন আগেও একটা পরিবার বাস করত ওই বাড়িতে। তাঁদের আওয়াজে সরগরম ছিল গোটা বাড়ি। আচমকাই সব নেই হয়ে গিয়েছে। তবে রয়ে গিয়েছে সেই বাড়ি। কালিয়াচকের সেই ‘হাউস অব ওয়াক্স’ এখন প্রতিবেশীদের কাছে আতঙ্কের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy