Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ছোঁয়া না লাগে রাজনীতির, সংশয়ে পড়ুয়া

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রথম সিমেস্টারের ছাত্রী কস্তুরী সরকার বলেন, ‘‘জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে জেএনইউ-এর ঘটনা নিয়েও ক্ষুব্ধ আমার মতো অনেক পড়ুয়াই।

প্রতিবাদ: পথে উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদ: পথে উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ ও রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৭
Share: Save:

ক্ষোভ থাকলেও রাজপথে নেই তার প্রতিফলন।

গৌড়বঙ্গ থেকে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়— সোশ্যাল মিডিয়ায় সেখানকার পড়ুয়াদের রোষের আঁচ মিললেও মিছিল, বিক্ষোভে নেই তাঁরা।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের হামলার পরে নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা, মুম্বইয়ের মতো দেশের নানা শহরে ছাত্রছাত্রীরা সরব হলেও, কেন গৌড়বঙ্গ আর রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের রাজপথে দেখা যাচ্ছে না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে।

কেন তা করা হচ্ছে না?

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রথম সিমেস্টারের ছাত্রী কস্তুরী সরকার বলেন, ‘‘জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে জেএনইউ-এর ঘটনা নিয়েও ক্ষুব্ধ আমার মতো অনেক পড়ুয়াই। সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলে ক্ষোভও উগড়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের সবাইকে নিয়ে রাস্তায় নামানোর মতো নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। সামনে থেকে কেউ নেতৃত্ব দিলে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও রাস্তায় প্রতিবাদে নামবে।’’

এ জন্য অরাজনৈতিক ভাবে তেমন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার কারও অভাবকেই দায়ী করেছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী দেবারতি দাস। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কোনও ব্যানারে আন্দোলন করে কোনও রং মাখতে চাই না। তবে জেএনইউ, জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা মেনে নিতে পারছি না। আমরাও চাই অরাজনৈতিক ভাবে আন্দোলনে কেউ নেতৃত্ব দিক। তা হলেই অনেকে এগিয়ে আসবে।’’

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে মালদহ, দুই দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদের পড়ুয়ারা পড়াশোনা করেন। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়েরাও পড়াশোনা করেন। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, নিরপেক্ষ ভাবে আন্দোলনে শামিল না হওয়ার পিছনে পড়ুয়াদের মানসিকতাও জুড়ে রয়েছে।

রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা সাহা বলেন, ‘‘এখনও গ্রামবাংলায় নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য অনেককে পরিবারের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় আন্দোলন, মিছিল করলে পরিবারের থেকেও চাপ আসে। সে জন্য প্রতিবাদের ভাষা মনেই চেপে রাখতে হয়।’’

মিছিল, মিটিং করলেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের তকমা সেঁটে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি। রাজ্যের বিষয়ে রাস্তায় নামছে কেন্দ্রের শাসকদলের ছাত্র সংগঠন। এমন অবস্থায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নামলে গায়ে রাজনৈতিক তকমা লেগে যেতে পারে। সেই আশঙ্কাতেও তাঁদের চুপ করে থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার গবেষক পড়ুয়া সায়ন্তন মিত্র বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এ বার আমাদের সকলকেই সমস্ত বেড়া ছিড়ে রাস্তায় নামা উচিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। তার প্রতিবাদ আমাদেরও করতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Violence Malda Gourbanga University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy