জলপাইগুড়ির এফডিআই স্কুলে যুব মঞ্চের পুজোমণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।
জেল থেকে বেরিয়েই প্রায় আধ কোটি টাকার কালীপুজোর আয়োজন করে ফেলেছেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অনুগামীদের দাবি, পুজো যত এগিয়ে আসছে আয়োজনের বহর যে ভাবে বাড়ছে, তাতে খরচের পরিমাণ ৫০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি ও জলপাইগুড়ির উপপুরপ্রধান সৈকত জামিন পেয়েছেন গত ১ নভেম্বর। তার পরেই ঠিক হয়, মাঝারি নয়, বড় মাপেরই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। সাত দিনের মধ্যে রাজ্য ভিন্ রাজ্যের দামী শিল্পীদের বায়না করে অনুষ্ঠানও ছকে ফেলা হয়েছে। মাত্র সাত দিনে বিপুল টাকা জোগাড়ের সংস্থান কী ভাবে হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। এমনকি, চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও।
কেমন আয়োজন হচ্ছে যুব তৃণমূল নেতার পুজোয়? প্রায় একশোটি বিমান টিকিট কাটা হয়েছে শিল্পীদের আসা-যাওয়ার জন্য। কলকাতা থেকে নামী শিল্পীদের আনা হচ্ছে। ত্রিপুরা থেকে আসবে মেয়েদের একটি গানের দল। শিল্পী এবং সঙ্গীদের কয়েক জন আসবেন বিমানে। শুধু বিমান ভাড়াতেই লাখ পাঁচেক টাকা খরচ হচ্ছে বলে দাবি। সঙ্গে রয়েছে শিল্পীদের বাকি সঙ্গীদের জন্য ট্রেন ভাড়া। আগামী ১৩ থেকে ১৫ নভেম্বর তিন দিন টানা সাত জন শিল্পীকে আনতেই প্রায় পঁচিশ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে বলে দাবি। মণ্ডপ তৈরিতে পড়ছে প্রায় আট লক্ষ টাকা। চন্দননগর থেকে আসছে আলোকসজ্জা। মণ্ডপের ভিতরে এক রকম, বাইরে এক রকম এবং মঞ্চে আর এক রকম আলোর সাজসজ্জা থাকছে। জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব স্কুলের মাঠে পুজো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাঁশের কাজ, আলো মিলিয়ে অন্তত পাঁচটি ডেকোরেটর সংস্থা এবং ইভেন্ট পরিচালনা সংস্থা কাজ করছে।
দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ায় অভিযুক্ত হয়ে গত ১৬ অক্টোবর থেকে সৈকত প্রথমে পুলিশ, তার পরে জেল হেফাজতে ছিলেন। গত কয়েক বছর ধরে সৈকত ‘যুব ঐক্য’ নাম দিয়ে কালীপুজো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছেন। এ বার সৈকত জেলে (পড়ুন হাসপাতালে) বসেই নির্দেশ দিয়েছিলেন, পুজো চালিয়ে যাওয়ার, তবে আড়ম্বর হবে না বলেই তাঁর নির্দেশ ছিল। ১ নভেম্বর সৈকত জামিন পেতেই পুরো সিদ্ধান্ত বদলে যায়। বড় অনুষ্ঠানেরই পরিকল্পনা হয়। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে চটজলদি এই টাকার জোগাড় হল কী করে? অন্য পুজোর মতো রসিদ ছাপিয়ে বাড়ি-দোকান থেকে চাঁদা তোলা হয় না সৈকতের পুজোয়। টাকার উৎস নিয়ে সৈকত এ দিন বললেন, “মানুষের ভালবাসাতেই সব জোগাড় হচ্ছে। সদস্য চাঁদা রয়েছে। যাঁদের সঙ্গে মানুষ নেই, তাঁরা হিংসে থেকে অনেক কিছু বলতে পারেন।”
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “কাদের ভালবাসলে, জলের মতো টাকা পাওয়া যায়, তৃণমূল নেতারা জানেন। জেলে থাকা তৃণমূল মন্ত্রী, নেতাদের যে টাকার উৎস, সৈকতের টাকার উৎস একই। তদন্ত হলেই প্রমাণ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy