Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Jalpaiguri

কংগ্রেসের ঘরে ভাঙন, যোগ তৃণমূলে

বিরোধীদের ঘর ভেঙে চমক দিয়ে পুরভোটে দলের অনুকূলে হাওয়া তোলা যাবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৮:৫৬
Share: Save:

কংগ্রেসের ঘর ভাঙল জলপাইগুড়িতে।

কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা জেলা কংগ্রেস নেতা স্বরূপ মণ্ডল গত সোমবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে স্বরূপ মণ্ডলের নাম আলোচনায় ছিল। লোকসভায় দল তাঁকে প্রার্থী না করলেও প্রার্থীর এজেন্ট করেছিল। জেলা রাজনীতিতে অন্যতম সক্রিয় আইনজীবী এই নেতার দল ছাড়ার ফলে পুরভোটের আগে কংগ্রেস বড় ধাক্কা খেল বলেই কর্মীদের একাংশ মনে করছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে আরও দুই কংগ্রেস কাউন্সিলরের সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর কথা হয়েছে। পুরভোটের আগে তাঁরাও দল ছাড়তে পারেন বলে খবর। যদিও, কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, তৃণমূলেরও বেশ কিছু কাউন্সিলর তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

কংগ্রেস নেতাকে দলে টেনে আপাতত দু’টি লক্ষ্য পূরণ হল বলে মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতারা। প্রথমত, লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে তৃণমূল শিবিরের মনোবল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। এ বারের পুরভোট তৃণমূলের কাছে আগে থেকে ‘হেরে যাওয়া যুদ্ধ’ বলে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিরোধীদের ঘর ভেঙে চমক দিয়ে পুরভোটে দলের অনুকূলে হাওয়া তোলা যাবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা। দ্বিতীয়ত, সম্প্রতি তৃণমূলের নয়া কমিটি গঠন নিয়ে দলে তুমুল অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগঠন বিরোধী কাজকর্মের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বিরোধী গোষ্ঠী। এই পরিস্থিতিতে জেলা কংগ্রেসের এক ওজনদার নেতাকে দলে টেনে তৃণমূলেরই বিরোধী-গোষ্ঠীকে শাসক-গোষ্ঠী উপযুক্ত জবাব দেওয়ার চেষ্টা করল বলেও ধারণা তৃণমূল নেতাদের ওই অংশের।

জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, “কে কী বলছেন জানি না। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। সে কথা সকলে বুঝতে পারছেন বলেই দলে যোগ দিচ্ছেন। সকলেই উন্নয়নের কাজ করতে চান।” কংগ্রেস এবং বামেদের জোটকেই দল ছাড়ার কারণ বলে দাবি করে স্বরূপ মণ্ডল জানান, এই জোট পুরোপুরি অনৈতিক। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে দাবি, জলপাইগুড়ি জেলায় দীর্ঘদিন ধরেই শক্তিশালী কংগ্রেস এবং তাদের মূল প্রতিপক্ষ ছিল সিপিএম। বাম শক্তির সঙ্গে এত দিন যাঁরা লড়াই করেছেন, এখন তাঁরাই চমকে গিয়েছেন দলীয় নেতৃত্বের পদক্ষেপে। তাঁদের কথায়, বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের হাত মেলানোকে তাই তাঁরা অনৈতিক বলেই মনে করছেন। স্বরূপ জানান, সেই কারণেই তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, স্বরূপ এবার নিজের ওয়ার্ড ৩ নম্বর থেকেই প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদারও তাই চেয়েছিলেন বলে খবর। ৩ নম্বর ওয়ার্ড গত পুরভোটে সিপিএমের জেতা ওয়ার্ড। বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হয়েছে। নিজেদের জেতা ওয়ার্ড কিছুতেই ছাড়তে রাজি হয়নি সিপিএম। কাজেই কংগ্রেসের হয়ে স্বরূপের ভোটে দাঁড়ানোর পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তার পরেই তিনি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে দাবি।

স্বরূপ দল ছাড়ার পরেই টাউন ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বিশ্বাসঘাতকের সংখ্যা আরেক জন বাড়ল’ লিখে মন্তব্য করেছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার বলেন, “টিকিট পাবে না জেনেই দলবদল হয়েছে। তৃণমূলের অনেক কাউন্সিলর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এর বেশি আপাতত কিছু বলছি না, ভবিষ্যতে যা হবে শহরবাসী দেখবেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy