আন্দামান ‘মডেলে’ই পরিচালিত হবে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ, হাইকোর্ট সূত্রে এমনটাই খবর। সোমবার জলপাইগুড়ি বেঞ্চের কাজ শুরুর প্রথম দিনে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার নিজেই ডিভিশন বেঞ্চে বসেন। সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আন্দামানে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ রয়েছে। তবে জলপাইগুড়ি হল একই রাজ্যের ভৌগোলিক সীমানায় হাইকোর্টের পৃথক একটি বেঞ্চ। এমনটা কলকাতা হাইকোর্টের ক্ষেত্রে প্রথম। এই ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন আপনারা।”
সোমবারই জলপাইগুড়ি বেঞ্চের কার্যপরিচালন পদ্ধতি কেমন হবে, সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।
হাইকোর্ট সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার্কিট বেঞ্চ বসবে। কতদিন পরপর বেঞ্চ বসবে, তা নির্ভর করবে কত মামলা হচ্ছে তার উপর। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বেঞ্চে চার জন করে বিচারপতি থাকবেন। সেক্ষেত্রে যদি বেশি সংখ্যক মামলা না হয় তা হলে এক সঙ্গে চার জন বিচারপতিকে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জলপাইগুড়িতে পাঠানোর যৌক্তিকতা থাকবে না বলে হাইকোর্ট প্রশাসন মনে করছেন। তবে তার জন্য উত্তরবঙ্গের চার জেলার বিচারপ্রক্রিয়া থমকে থাকবে তাও চাইছে না হাইকোর্ট। কোনও জরুরি বিষয় হলে তা কলকাতা হাইকোর্টে রুজু করা যাবে। সেখানে মামলা শুনে প্রধান বিচারপতি মনে করলে জলপাইগুড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারেন। এমনটা আন্দামান বেঞ্চেও হয়।
কলকাতা হাইকোর্টে থাকা উত্তরবঙ্গের এই জেলাগুলির বকেয়া মামলার শুনানিও জলপাইগুড়ি বেঞ্চে হবে না। আন্দামানের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর করা হয়েছিল। জনস্বার্থ মামলা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পেশ করতে হয়। সার্কিট বেঞ্চে সব সময় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ থাকবে না, সে সময় কী হবে, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতিই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে হাইকোর্টের একটি সূত্রের দাবি।
এ দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার যখন ডিভিশন বেঞ্চে বসেন তখন আদালত ঘর আইনজীবীদের ভিড়ে থিকথিক করছে। কলকাতা সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার আইনজীবীরা এসেছিলেন। জলপাইগুড়ি বেঞ্চ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটার শাশ্বত গোপাল মুখোপাধ্যায় সহ আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন জানান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের বলেন, “আপনারা একটা ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন।”
বিচারপতি গোড়া থেকেই বিচারপ্রার্থী এবং আম নাগরিকদের কথা বলেছেন। বিচারপতির মন্তব্য, “বিচারপ্রার্থী এবং আম নাগরিকদের জন্য এত কিছু। তাঁদের কথা সব সময় মনে রাখবেন। কোনও ছোট-সামান্য বিষয়ে জটিলতা তৈরি করে বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা না দেওয়াই কাম্য।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “এ কথা আমি শুধু হাইকোর্টের ক্ষেত্রে বলছি না, রাজ্যের প্রধান বিচারপতি হিসেবেই বলছি।” আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন জেলা বা মহকুমা আদালতে কথায় কথায় কাজ বন্ধ রাখার প্রবণতায় রাশ টানতেই প্রধান বিচারপতি ইঙ্গিত করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy