সার্কিট বেঞ্চে শুনানির প্রথম দিনই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চে ধমক খেল পুলিশ। বুধবার পাঁচটি জামিন ও একটি আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি ঠিক হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল পাহাড়ের মামলাও। কিন্তু একটি বাদে কোনওটির কেস ডায়েরি সংশ্লিষ্ট থানা থেকে আদালতে এসে পৌঁছয়নি। যা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। তখন সরকারি আইনজীবীরা জানান, মঙ্গলবারই থানাগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যা শুনে ক্ষুব্ধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এ সব আমি বরদাস্ত করব না। দু’ঘণ্টা সময় দিচ্ছি, আদালতে কেস ডায়েরি না এলে তদন্তকারী অফিসারকে বরখাস্ত করব।’’
পরে অবশ্য কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে দেন তিনি। তবে সতর্ক করে বলেন, ‘‘আর একদিন সময় দিচ্ছি। আমি উত্তরবঙ্গের আইজিকে নির্দেশ করে দিচ্ছি। আগামীকালের মধ্যে যদি কেস ডায়েরি জমা না পড়ে তবে সাসপেন্ড করে দেব।” এরপর থেকে এমন ‘ভুল’ রেয়াত করা হবে না বলেও বিচারপতি সমাদ্দার জানিয়ে দিয়েছেন। এ দিন আদালতে ওঠা সব মামলার ক্ষেত্রেই একই নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানবিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার এবং বিচারপতি মুমতাজ খানের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ বৃহস্পতিবার কেস ডায়েরির সঙ্গেতদন্তকারী অফিসারদেরও উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ দিন প্রথম মামলাটি ছিল কার্শিয়াংয়ের ধৃত কাউন্সিলর শান্তি রাইয়ের জামিনের আবেদনের। গত বছর থেকে তিনি জেলবন্দি রয়েছেন। মামলার নথি পেশ করতেই সরকারি আইনজীবী অদিতিশঙ্কর চক্রবর্তী, সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেস ডায়েরি কোথায়? মনে রাখবেন এটা হাইকোর্ট।” কেস ডায়েরি না থাকায় কিছুক্ষণের মধ্যেই শুনানি শেষ হয়ে যায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কেন তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাও আইনজীবীদের বুঝিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। এজলাসে উপস্থিত বাদি-বিবাদী সব আইনজীবীদের কাছেই আইনগত দিকটি তুলে ধরেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “মনে করুন কারও আবেদন জামিন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু কেস ডায়েরি জমা না পড়ায় তাঁর জামিন পাওয়া একদিন পিছিয়ে গেল। তাহলে সেই একদিনও কিন্তু অবৈধ ভাবে আটকে রাখার সামিল হবে।”
প্রথম দিনেই এমন ঘটনায় তিনি যে পুলিশের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছে তা ঠারেঠারে বুঝিয়েও দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। সরকারি আইনজীবীদের তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের পুলিশের আইজিকে বলে দিন যেন আপনাদের সঙ্গে, বিচার বিভাগের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেন। না হলে আমরা জানি কী পদক্ষেপ করতে হয়।” যা শুনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে পুলিশের মধ্যে। এ দিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা থেকে কয়েকটি মামলার কেস ডায়েরি হাইকোর্টে পাঠিয়েও দেওয়া হয়।
ডিভিশন বেঞ্চ উঠে যাওয়ার পরে এ দিনই উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার এবং জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিকে হাইকোর্টে ঢুকতে দেখা যায়। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে তাঁদের প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy