দুই বিজ্ঞানী। (বাঁ-দিক থেকে) পার্থসারথি চক্রবর্তী ও রাজদীপ রায়। (ডান দিকে) ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিজ্ঞানীদের প্রশ্নোত্তর-পর্ব। নকশালবাড়ির একটি শিক্ষাঙ্গনে। ছবি: স্বরূপ সরকার
মহাকাশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা কী ভাবে হচ্ছে? চন্দ্রযান দুই এবং তিনের মধ্যে ফারাক কী? প্রাণের অস্তিত্ব প্রথম কোথায় মিলেছিল? স্কুলপড়ুয়াদের এমনই নানা প্রশ্ন। তার উত্তর দিচ্ছিলেন দুই বিজ্ঞানী— ‘ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন’ (ইসরো)-এর রাজদীপ রায় এবং শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারপ্রাপ্ত পার্থসারথি চক্রবর্তী। বেসরকারি একটি স্কুলের রজতজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে বিজ্ঞান উদ্ভাবনী উৎসবে আমন্ত্রণ পেয়ে তাঁরা এসেছিলেন। তৃতীয় চন্দ্রযানের সফল অভিযানের সঙ্গে যুক্ত রাজদীপ। ভাটনগর সম্মানপ্রাপ্ত পার্থসারথি শিলিগুড়িরই বাসিন্দা। তাঁদের সামনে পেয়ে পড়ুয়াদের উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
শুধু পডুয়ারাই নয়, দুই বিজ্ঞানীর কথা শুনতে উদ্গ্রীব ছিলেন স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকেরাও। চন্দ্রাযানের সাফল্য ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণা নিয়ে পড়াশোনায় ইচ্ছুক পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের বিপুল উৎসাহ জুগিয়েছে।মহাকাশ গবেষণা করতে কী করে এগোতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দেন রাজদীপ। তিনি জানান, আগামিদিনে ইসরো-র গগনায়ন প্রকল্পে মহাকাশে রোবট এবং মানুষ পাঠানোর ভাবনাচিন্তা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ইসরো-র তরফে এখানে এসে ভাল লাগছে। অন্য ভাষার চেয়ে মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চা করার আলাদা অনুভূতি। বিক্রম সারাভাই এবং ইসরো-র প্রতিষ্ঠার কথা মাথায় রেখে এটাই মনে রাখার যে, আমাদের দেশকে মহাকাশ গবেষণায় আরও এগোতে হবে।’’
মুখোমুখি প্রশ্নোত্তর-পর্বে ছাত্রী সোহিনী মণ্ডল জানতে চায়, চন্দ্রযান-২ এবং চন্দ্রযান-৩— এ দুয়ের মধ্যে পার্থক্য কী এবং কেন একটা সফল হল আর অন্যটা হল না। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ঊর্মি মণ্ডলের জিজ্ঞাসা— ইসরো-র ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? সপ্তম শ্রেণির সায়ন বসুর প্রশ্ন— উন্নত ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ কী ভাবে মিলবে? সুভাষ সেনের প্রশ্ন— সূর্যের কাছে যাচ্ছে যে আদিত্য-এল-১, প্রচণ্ড গরম সহ্য করার জন্য তা কী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে? এমন সব প্রশ্ন শুনে তারিফ করলেন দুই বিজ্ঞানী।
রাজদীপ বলেন, ‘‘ইসরো আমাদের জীবনের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত। টিভি চ্যানেল দেখা থেকে আবহাওয়ার খবর— সব বিভিন্ন উপগ্রহ মারফত মিলছে। এ বছর গগনায়ন মিশন হতে চলেছে, যাতে রোবটকে মহাকাশে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুতে পাঠিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং তাকে ফের সমুদ্রে নামিয়ে আনা হবে।’’
পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তরে পার্থসারথি বলেন, ‘‘আবহাওয়া পরিবর্তন রুখতে এখন কার্বন-ডাই অক্সাইড যতটা আমরা ছাড়ছি, ততটা শোষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে।’’ তিনি পড়ুয়াদের বলেন, ‘‘পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব প্রথম জলে মিলেছিল বলে ধারণা করা হয়। তার কারণ, সমুদ্রের জলে তখন মিথেন এবং অ্যামোনিয়া ছিল। বজ্র-বিদ্যুতের কারণে তা মিলে অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরি করে। তা প্রোটিনের একক। প্রাণের উৎস।’’
এ দিন শিক্ষায়তনের এক ছাত্রী নিজের হাতে চন্দ্রযানের ছবি আঁকা কার্ড দিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এই কার্ড তৈরি করেছে সে ইসরো-কে অভিনন্দন জানিয়ে। রাজদীপ বলেন, ‘‘এই উৎসাহ দেখে ভাল লাগছে। কার্ডটি ইসরো-কে দেব, বোর্ডে লাগানোর জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy