অপরিষ্কার হাসপাতালের মেঝে। —নিজস্ব চিত্র
জরুরি বিভাগ পেরিয়ে গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই তীব্র কটু গন্ধ আসে নাকে। এ দিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নোংরা আবর্জনা। দুর্গন্ধে বাথরুমের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। এটাই রোজকার চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসলামপুর হাসপাতালে। হাসপাতালের এমন পরিবেশে রোগীর সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বলে জানাচ্ছেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
ইসলামপুর ও সংলগ্ন এলাকায় অন়্য কোনও বড় কোনও হাসপাতাল না থাকায় ইসলামপুরের মহকুমা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল স্থানীয় বাসিন্দারা। এই হাসপাতালে আগে ৬৮টি শয্যা থাকলেও পরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮০টিতে। ইসলামপুর মহকুমার পাশাপাশি বিহারের রোগীরাও এখানে আসেন চিকিত্সা করাতে। রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে রোগী কম থাকায় কিছুটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলেও প্রসূতি বিভাগে দুর্গন্ধের জেরে ঢোকাই যায় না। ওই বিভাগে রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি থাকে যে মাটিতেও রোগীদের থাকতে হয়।
অভিযোগ, হাসপাতাল নিয়মিত সাফাই হয় না। সিঁড়িতে নোংরা, পানের পিক লেগে থাকে। ডাস্টবিন উপচে আবর্জনা পড়ে থাকলেও তা সাফাই করা হয় না বলে অভিযোগ রোগীর আত্মীয়দের। এমনকী রোগীকে নিয়ে যাওয়ার স্ট্রেচারেও রক্ত, বমি লেগে থাকে বলে দাবি করেছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। হাসপাতালের সাফাইয়ের কাজে ফিনাইল ও ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় না বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। প্রশাসনের তরফে কেউ হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে তখনই একমাত্র হাসপাতালে সাফাই অভিযান চলে বলে অভিযোগ। ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে চিকিত্সাধীন ইসলামপুরের ডিমঠির বাসিন্দা এক মহিলার স্বামী তাসিবুল হুসেন বলেন, ‘‘স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। অপরিস্কার ঘরে দুর্গন্ধের মধ্যে রোগীরা যে কী ভাবে থাকেন তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।’’ একই অভিযোগ করেছেন অপর এক রোগীর স্বামী গোয়ালপোখরের নন্দঝাড়ের বাসিন্দা মহম্মদ মাজাহির আলি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই হাসপাতালের সাফাইয়ের দায়িত্বে রয়েছে রায়গঞ্জের একটি ঠিকাদার সংস্থা। সংস্থার তরফে নিযুক্ত সাফাইকর্মীদের সুপারভাইজার মহম্মদ নাসির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে দাবি করেছেন নিয়মিত সাফাই হয় হাসপাতালে। হাসপাতালের কর্মীদের দাবিও একই। হাসপাতালে অপরিচ্ছন্নতার কারণে উল্টে রোগীদের দায়ী করছেন তাঁরা। ইসলামপুর হাসপাতালের সুপার নারায়ণচন্দ্র মিদ্যা ছুটিতে থাকায় এখন সুপারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ওই হাসপাতালেরই চিকিত্সক আবদুল সামস। তাঁর দাবি, হাসপাতালে নিয়মিত সাফাই চলে, প্রতিদিন একাধিক বার পরিষ্কার করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘রোগীদেরও হাসপাতালকে নিজের বাড়ির মতো মনে করতে হবে। তাহলেই পরিষ্কার থাকবে হাসপাতাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy