কাশ্মীর থেকে ফিরেও আতঙ্ক কাটেনি মনিরুলের। রবিবার করণদিঘির বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
ঘরে ফিরেও স্বস্তিতে নেই কাশ্মীর উপত্যকায় গুলিতে জখম করণদিঘির পরিযায়ী শ্রমিক মনিরুল ইসলাম। অন্য সঙ্কটের মুখে পড়েছেন তিনি। দিন যত যাচ্ছে, টান পড়ছে হাঁড়িতে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গিদের গুলিতে জখম হন মনিরুল। সেখানে কিছু দিন চিকিৎসার পরে গত শুক্রবার ঘরে ফিরেছেন করণদিঘির দিঘলগাঁও গ্রামের এই বাসিন্দা। কাজের সূত্রে পুলওয়ামা গিয়েছিলেন মনিরুল। কিন্তু বাড়ি ফিরলেও সে দিনের আতঙ্ক এখনও তাড়া করছে তাঁকে।
মনিরুলের বড় ভাই হাসনুজাম্মান রবিবার বলেন, ‘‘বাড়ি ফেরার পরেও ঘুমের মধ্যে চমকে উঠছে। বাড়িতে পৌঁছেও কাশ্মীর যেন পিছু ছাড়ছে না।’’
জেলার মধ্যে শিক্ষা এবং আর্থিক দিক পিছিয়ে পড়া করণদিঘি ব্লক। সেই ব্লকের গ্রাম দিঘলগাঁও। গ্রামে যেতে হয় মেঠোপথ ধরে। কারও বাড়ি বেড়ার। কারও টিনের চালার। ঘরের কাছে কাজকর্ম নেই। গ্রামের বেশির ভাগ যুবক ভিন্ রাজ্যে কাজ করেন। এই গ্রামের ১৫ জন যুবক কাশ্মীরে একটি আপেল বাগানে কাজ করেন। ওই দলে ছিলেন মনিরুলও। মনিরুলের পরিবারে মা ও স্ত্রী রয়েছেন। চার মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন। বাড়িতে নিত্য অভাব। তাই গ্রামের হাবিবুর, জামিলদের সঙ্গে তিনিও বাড়তি রোজগারের আশায় কাশ্মীরে পাড়ি দিয়েছিলেন।
তিন বছর কাশ্মীরে কাজ করছেন মনিরুল। লকডাউনে বাড়ি ফেরেন। এলাকায় কাজ না মেলায় ছ’মাস আগে ফের পাড়ি দিয়েছিলেন কাশ্মীর উপত্যকায়। দু’বেলা খাবার আর দৈনিক পাঁচশো টাকা মজুরি। তাঁর কথায়, ‘‘ভালই ছিলাম। মাঝেমধ্যে সামান্য গোলমাল হত। কিন্তু এ বার যা হল, তা কখনও ভাবিনি। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। এলাকায় ভিক্ষে করে খাব। তবু আর কাশ্মীরে কাজের জন্য যাব না।’’
হাসানুজ্জামান বলেন, ‘‘খেতের জমি বন্ধক রেখে ভাইকে কষ্ট করে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছি। পায়ে এখনও গুলি রয়ে গিয়েছে। অস্ত্রোপচার করে বার করতে হবে। কিন্তু খরচ কী ভাবে আসবে তা জানি না। রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসারেও টান পড়েছে। সব মিলিয়ে আরও সঙ্কট তৈরি হয়েছে।’’
করণদিঘির বিধায়ক গৌতম বলেন, ‘‘মনিরুলের চিকিৎসার ব্যাপারে সহায়তা করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy