রওনা: কলকাতার ধর্মতলায় সমাবেশের উদ্দেশে যাত্রা। বালুরঘাটে শুক্রবার। ছবি: অমিত মোহান্ত
একুশের সমাবেশের জন্য তৃণমূল কর্মীদের কলকাতা আসার ভিড় বাড়ল শুক্রবার। দুই দিনাজপুর থেকে এ দিন বহু কর্মী তেভাগা, রাধিকাপুর, গৌড়লিঙ্ক এক্সপ্রেস ধরেছেন। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁদের ক’জন টিকিট কেটেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রায়গঞ্জের শীতগ্রাম এলাকার তৃণমূল কর্মী সনাতন সরকার, গোবিন্দনাথ বর্মণ ও দয়ালু শেখ জানালেন, এই নিয়ে পরপর তিন বছর ২১ জুলাই কলকাতা যাচ্ছেন। সনাতন বলেন, ‘‘আগের দু’বার ট্রেনের টিকিট না কেটে যাতায়াত করেছি। কোনও সমস্যা হয়নি। তাই এ বছরও টিকিট কাটিনি।’’ দয়ালুরও একই কথা।
অনেক নেতাও এ দিনই কলকাতা রওনা হয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বেশ কয়েক জনকে নিয়ে কলকাতার ট্রেনে উঠেছেন। আজ, শনিবার বালুরঘাট থেকে ভোরের তেভাগা এক্সপ্রেসে জেলা নেতা দেবাশিস মজুমদারের নেতৃত্বে বাকি ৮ জন জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা নেতারা কলকাতা যাবেন। কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল, প্রাক্তন বিধায়ক মাহমুদা বেগমরা দলবল নিয়ে কলকাতার পথে। কালিয়াগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ ও কালিয়াগঞ্জ পুরসভার তৃণমূলের পুরপ্রধান কার্তিকচন্দ্র পাল। অসীম স্লিপার কোচ ও কার্তিক শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় আসন সংরক্ষণ করেছেন। গৌড় এক্সপ্রেসের মহিলা কামরায় তৃণমূলের মহিলা কর্মীদের ভিড়ে ঠাসা ছিল। জেনারেল কামরাতেও এক অবস্থা। ফলে ওই কামরার অনেক সাধারণ যাত্রী শেষ মুহূর্তে কাউন্টারে গিয়ে টিকিট বাতিল করেন। তবে সাধারণ যাত্রীদের আসন দখল করে দলের কোনও কর্মী যাচ্ছেন না বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
অসীমের যুক্তি, ‘‘কর্মীদের টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠার নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল। দলের বহু কর্মীর ট্রেন ধরতে জেলার বিভিন্ন স্টেশনে আসতে দেরি হওয়ায় ও টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড়ের কারণে তাঁরা এ দিন টিকিট কাটতে পারেননি।’’
এ দিন গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্টেশনে শিবির করে কর্মীদের দই ও চিঁড়ে দেওয়া হয়। এ দিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে ছাপানো ডেলিগেটস-কার্ড নিয়ে কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক ট্রেনে চেপে বসেন। নেতারা তাঁদের জানান, ওই কার্ডই ট্রেন-যাত্রার ছাড়পত্র। টিটিই টিকিট দেখতে চাইলে কর্মীরা যেন ওই ডেলিগেটস-কার্ড দেখিয়ে দেন। তবে তৃণমূল নেতাদের কথায়, এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
পাশাপাশি হিলি, হরিরামপুর, কুশমণ্ডি ব্লক থেকে একাধিক বাস ভাড়া করে কর্মীরা রওনা হয়েছেন। বিরোধীরা তাতে কটাক্ষ করেছে। তাঁদের দাবি, বাস ভাড়া করলে কত কর্মী গেলেন, তার হিসেবে জল মেশানো সহজ। তবে তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ছেন, নিয়ম মেনেই বাস ভাড়া করে বহু কর্মী পাঠানো হয়েছে।
ট্রেনে শিয়ালদহ এবং চিতপুর স্টেশনে নামার পরে কর্মীদের গাড়ি করে জেলার জন্য নির্দিষ্ট ভবন, হোটেল ও আবাস্থলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা দল থেকে করা হয়েছে। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের পরদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের দলের ১১ জন সদস্যকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করবেন। ২৩ জুলাই গঙ্গারামপুর পুরসভার অনাস্থা নিয়েও আলোচনা হবে।
উত্তর দিনাজপুরের পরিস্থিতি নিয়ে অসীমের দাবি, সম্প্রতি নদীগুলোয় জল বাড়ায় ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, করণদিঘি, কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তার জেরে এ বছর সেইসব এলাকার দলের বহু কর্মী শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘‘তাই লক্ষ্য অনুযায়ী এ বছর জেলার প্রতিটি বুথ থেকে ২০ জন করে কর্মীকে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে শামিল করানো সম্ভব হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy