প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায় চৌধুরী চালু করেছিলেন এক অভিনব দৌড়। —নিজস্ব চিত্র।
প্রত্যেকের মাথায় কালীর প্রতিমা। তাই নিয়ে দিতে হবে দৌড়়। গত সাড়ে তিনশো বছর ধরে এ ভাবেই শ্যামাপুজোর প্রতিমা বিসর্জনের রীতি মালদহের চাঁচলের মালতীপুরে। মঙ্গলবার সেই ‘খেলা’য় অংশ নিলেন এলাকাবাসীরা। ‘কালী দৌড়’ দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। সব মিলিয়ে মালতীপুর এলাকার ৮টি কালীপ্রতিমাকে কাঁধে-মাথায় নিয়ে ছুটলেন এলাকাবাসী।
কথিত আছে, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরী চালু করেছিলেন এই আজব প্রতিযোগিতা। কেন এমন দৌড়? এ নিয়ে রয়েছে আর এক কাহিনি। যে সময়কার কথা, তখন মালতীপুরে একটি মাত্র পুকুর ছিল। কালীবাড়ি-লাগোয়া সেই পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হত একের পর এক প্রতিমাকে। ভিড় এড়াতে একটি পরিকল্পনা করেন রাজা শরৎচন্দ্র, যাতে সুষ্ঠু ভাবে প্রতিমা নিরঞ্জনও হবে আর মানুষের মনোরঞ্জনও করা যাবে।
সেই থেকে দীপান্বিতা অমাবস্যা অর্থাৎ, কালীপুজোর পরের দিন সন্ধ্যায় মালতীপুর বাজারে একটি কালী দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন রাজা। প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল এই কালী দৌড়ের পরও যাঁর কালী প্রতিমার কোনও ক্ষতি হবে না, তিনি সবার আগে কালীদিঘিতে বিসর্জন দিতে যেতে পারবেন।
সে রাজাও নেই। রাজপাটও চুকে গিয়েছে কবে। তবে থেকে গিয়েছে সেই রীতি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মালতীপুরে ‘প্রতিযোগী’দের কারও মাথায় ছিল ‘বুড়ি কালী’, কারও ‘চুনকা কালী’, ‘বাজারপাড়া কালী’, ‘আম কালী’, ‘হ্যান্টা কালী’, ‘হাট কালী’ অথবা ‘শ্যামা কালী’।
এ বছরও মালতীপুর বাজার এলাকা পরিক্রমা করে প্রতিমা নিয়ে আসা হল কালীবাড়ি লাগোয়া সেই কালীদিঘিতে। তার পর বিসর্জন। ধ্বনি উঠল, ‘‘আসছে বছর আবার হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy