মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে পুজো ও যজ্ঞ। নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের মৃত্যু নিয়ে তদন্তে সোমবারের পরে, ফের বৃহস্পতিবার রাধিকাপুরের চাঁদগাঁও গ্রামে গেল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়তুতো দাদা বিষ্ণু বর্মণের বাড়িতে পৌঁছন। ঘণ্টা দুয়েক ওই বাড়িতে বসেই বিষ্ণু-সহ তাঁর স্ত্রী কণিকা রায় বর্মণ ও মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা সবেন বর্মণের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের সদস্যেরা। ইতিমধ্যেই কালিয়াগঞ্জ থানার বর্তমান আইসি সুবল ঘোষ, প্রাক্তন আইসি দীপাঞ্জন দাস-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মীর বয়ান রেকর্ড করেছেন কমিশনের সদস্যেরা।
সোমবার বিকেলেও কমিশনের সদস্যেরা মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে গিয়ে ঘণ্টা তিনেক ধরে তাঁর বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মণ, স্ত্রী গৌরী, দাদা মৃণালকান্তি ও বিষ্ণু-সহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এ দিন বিষ্ণু বলেন, ‘‘২৬ তারিখ রাতে গ্রামে পুলিশ আসার পরে কী ঘটেছিল, সমস্ত ঘটনা শোনেন কমিশনের সদস্যেরা। তাঁকে কেন পুলিশ ধরতে এসেছিল, বাবাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ তাঁকে মারধর করেছিল কি না, কখন তাঁর বাবাকে পুলিশ ছাড়ে, জামাইকে পুলিশ কেন ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, সবই শোনেন তাঁরা। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনে তা লিপিবদ্ধ করে নেন কমিশনের সদস্যেরা।’’
কমিশনের সদস্যদের কাছে বিষ্ণু দাবি করেন, এলাকায় ‘বিজেপির প্রভাব কমাতেই’ তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করতে এসেছিল। থানা ভাঙচুরের ভিডিয়ো ফুটেজে পুলিশ তাঁকে দেখতে পেলে, যা শাস্তি দেওয়া হবে তা-ই তিনি মাথা পেতে নেবেন বলে কমিশনকে জানান তিনি। পাশাপাশি, তিনি ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। প্রয়োজনে, রায়গঞ্জের বারদুয়ারির বাসিন্দা তাঁর জামাইয়ের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে কমিশনের সদস্যেরা তাঁকে জানিয়েছেন, দাবি বিষ্ণুর।
বাড়ির পাশেই মৃত্যুঞ্জয়ের দেহ সমাহিত রাখার পরে, বাড়ি ছাড়েন মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা, মা-সহ গোটা পরিবার। মৃত্যুঞ্জয়ের শ্রাদ্ধশান্তির কাজ মালদহের এক গোপন আস্তানায় করেছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। এ দিন মৃত্যুঞ্জয়ের আত্মার শান্তি কামনায় বাড়িতে পূজার্চনা ও যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের সঙ্গে এ দিন বিকেলে দেখা করেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকার। মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলে দীপাঞ্জনের পড়াশোনার জন্য ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের তরফে পরিবারের হাতে এ দিন আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয়।
এ দিকে, পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় সিআইডি তদন্ত চলছে। জেলা প্রশাসনের তরফেও মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ৬ জুন কালিয়াগঞ্জ ব্লক অফিসে গ্রামবাসীদের উপস্থিত থাকার কথা জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। মহকুমাশাসক (রায়গঞ্জ) কিংশুক মাইতি বলেন, ‘‘ব্লক অফিসে গ্রামবাসীদের উপস্থিত থাকার জন্য চাঁদগাঁও গ্রামে মাইকে প্রচার করার পাশাপাশি, পোস্টার সাঁটিয়ে দেওয়া হবে। গ্রামবাসীরা অফিসের সভাকক্ষে এসে তাঁদের বক্তব্য জানাতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy