প্রতীকী ছবি
এক দিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার ঢল। অন্য দিকে লালারসের নমুনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাব। তাতেই করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নমুনা পরীক্ষার গতিতে ছেদ পড়েছে। সংগ্রহ করা অন্তত সাত হাজার নমুনা জমে রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং মালদহ মেডিক্যালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি (ভিআরডিএল)-এ। নতুন সংগ্রহ করা লালারস আগে পরীক্ষা করবেন, না জমে থাকা নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট ছাড়বেন, তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ৫-৬ দিন আগে নমুনা পাঠিয়ে রিপোর্ট না মেলায় জেলাগুলিও চাপ দিতে শুরু করেছে।
সরকারি হিসেব মতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে সাড়ে ছ’হাজার এবং মালদহ মেডিক্যালে প্রায় ৩ হাজার নমুনা জমে আছে। পরিস্থিতি সামলাতে কার্যত দিশাহারা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের নমুনা পরীক্ষার যে কথা কিছু দিন আগেই বলেছিলেন তাঁরা, বাস্তবে তা সম্ভব না বলেই মনে করছেন অনেকে। বেশি সংখ্যায় নমুনা সংগ্রহের জন্য যে উদ্যোগ শুরু হয়েছিল, পরিকাঠামোর অভাবে তার বদলে এখন ধীরে চলারই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তাতেই সিদুঁরে মেঘ দেখছেন অনেকে।
অথচ পরিযায়ী শ্রমিকদের নমুনা পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ। সে কথা মাথায় রেখেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে নমুনা সংগ্রহের জন্য গত এক সপ্তাহে অন্তত ১০ হাজার ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম (ভিটিএম) বিলি করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার ঢল নামায় নমুনার পরিমাণও বেড়েছে ব্যাপক হারে। লালারস সংগ্রহ বাড়াতে মোবাইল কিয়স্কও চালু করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে রোজ সাড়ে তিন হাজারের বেশি নমুনা সংগ্রহ হচ্ছিল উত্তরবঙ্গে। অথচ দুই ল্যাবরেটরি মিলিয়ে দেড় থেকে দুই হাজারের মতো নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হত রোজ। বাকি নমুনা ল্যাবরেটরিতে জমে থাকত। ল্যাবরেটরির একটি সূত্রে দাবি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে দু’টি রিয়্যাল টাইম পিসিআর, তিনটি ট্রু-ন্যাপ, একটি সিবি ন্যাপ যন্ত্র রয়েছে। মালদহে বর্তমানে একটি পিসিআর এবং আরটিপিসিআর যন্ত্র রয়েছে। পুল টেস্ট করেও তা দিয়ে এর বেশি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব নয়।
পরিস্থিতি সামলাতে কী করছে স্বাস্থ্য দফতর? করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘নমুনা সংগ্রহ এ ভাবে চলতে থাকলে সমস্যা হবে। তাই জেলাগুলি থেকে রোজ আপাতত লালারসের নমুনা সংগ্রহ কমাতে বলা হয়েছে।’’ সূত্রের খবর, আগামী এক সপ্তাহ রোজ জেলা প্রতি ৫০টির বেশি নমুনা সংগ্রহ করতে মানা করা হয়েছে। জমে থাকা নমুনা ফুরলে পরের সপ্তাহ থেকে রোজ জেলাগুলি মিলিয়ে এক হাজারের মতো নমুনা পাঠাতে বলা হয়েছে দুই মেডিক্যালে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মালদহে জানানো হয়েছে, সব পরিযায়ী শ্রমিকের নমুনা সংগ্রহের দরকার নেই। দিল্লি, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্র থেকে যাঁরা ফিরছেন, আপাতত তাঁদের নমুনাই সংগ্রহ করা হবে। বাকিদের উপসর্গ না-থাকলে নমুনা সংগ্রহের দরকার নেই।
ধীর গতিতে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হলে পরিযায়ী শ্রমিকদের বড় অংশ বাদ পড়ে যাবে। উপসর্গহীন ওই শ্রমিকদের থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের একাংশের। আবার যেখানে আক্রান্ত রোগী মিলছে, ওই কনটেনমেন্ট জ়োনে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, তা খতিয়ে দেখার কাজ বাধা পাবে। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তবেই কোয়রান্টিনে রাখা শ্রমিকদের ছাড়া হবে বলা হলেও, তা মানাও সম্ভব হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy