Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ফিরেও ফিরল না আব্বু

বিরিয়ানি দূর, মেয়েকে ভরপেট খেতে দেওয়ায় এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে কালিয়াচকের সিলামপুরের সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকা আসফাক শেখের কাছে।

সওয়ারি: ট্রেনে করে বাড়ি পথে শ্রমিকরা। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

সওয়ারি: ট্রেনে করে বাড়ি পথে শ্রমিকরা। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৪:৫২
Share: Save:

গ্রামে ফিরলেও, বাড়িতে আসেনি ‘আব্বু’। ‘আব্বু’ থাকছে তারই প্রাথমিক স্কুলে। এ দিকে এগিয়ে আসছে খুশির ইদ। কিন্তু নতুন জামা, কাচের চুড়ি, মেহেন্দি এখনও না আসায় মুখ থেকে যেন হাসি উধাও হয়েছে বছর চারের সাবানা খাতুনের। ‘লকডাউন’, ‘কোয়রান্টিন’-এর মানে জানে না একরত্তি মেয়েটি। শুধু জানে, ইদের দিন দু’হাতে মেহেন্দি, নতুন পোশাক পরে আব্বুর সঙ্গে যাবে মোড়ের বিরিয়ানির দোকানে।

বিরিয়ানি দূর, মেয়েকে ভরপেট খেতে দেওয়ায় এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে কালিয়াচকের সিলামপুরের সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকা আসফাক শেখের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘কাজ হারিয়ে মুম্বইয়ে ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হয়েছে। যা টাকা ছিল গাড়ি ভাড়াতেই সব চলে গিয়েছে। ইদের মুখে খালি হাতে ফিরেছি। সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রয়েছি। ইদের দিনেও কোয়রান্টিন কেন্দ্রেই থাকতে হবে।” তাঁর আক্ষেপ, “নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লকডাউন শুরুর ২০ দিন আগে মুম্বইয়ে গিয়েছিলাম। নতুন জামা, মেহেন্দি নিয়ে আসতে বলেছিল মেয়ে। কিছুই আনতে পারিনি।”

আসফাকের মতোই খুশির ইদে ভাটা পড়েছে রমজান আলি, রফিকুল আলিদের। কালিয়াচকের সিলামপুরই নয়, মোথাবাড়ি থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল থেকে সুজাপুর-সব মহল্লায় এখন এমনই ছবি। রমজান মাসের পরে আসে খুশির ইদ। ইদের আগে মালদহের মহল্লায় মহল্লায় শুরু হয় ঘরে ফেরার আনন্দ। ট্রেন, বাসে আসতে শুরু করেন ভিন্ রাজ্যে থাকা জেলার শ্রমিকেরা। নতুন রঙের প্রলেপ পড়ে মহল্লার মসজিদে। রঙিন কাগজে সেজে ওঠে চার পাশ।

এ বারের ছবি একেবারে ভিন্ন।

রঙের প্রলেপ পড়েনি মসজিদে। ইদের আগে ঘরে ফেরা শুরু হলেও হাসি নেই পরিযায়ী শ্রমিকদের। জেলায় ফিরেই তাঁদের কেউ প্রশাসনের নির্দেশে রয়েছেন সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে, কেউ হোম কোয়রান্টিনে।

কালিয়াচকের বাসিন্দা টনিক শেখ বলেন, “লকডাউনে আটকে পড়েছিলাম তেলঙ্গানায়। কখনও শুকনো মুড়ি, কোনও দিন ত্রাণের চিড়ে, গুড় খেয়ে থাকতে হয়েছে। ধারদেনা করে কোনও রকমে বাড়ি ফিরেছি। কিন্তু ফিরেও চলছে লড়াই।’’ স্থানীয় এক গৃহবধূ বলেন, “পেট ভরাতে ভরসা রেশনের চাল। তবে রেশনের চাল ফুটিয়ে খাওয়ার জন্য দরকার জ্বালানি। সেই জ্বালানি কেনার টাকা পাব কোথায়। স্বামী তো রয়েছে সরকারি কোয়রান্টিনে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Ramadan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy