কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার উদ্বোধন করলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।
গত কয়েক বছর ধরে তাঁর হাত দিয়েই উদ্বোধন হয়ে আসছিল রাসমেলার। এবার উদ্বোধনে দেখাই গেল না উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। তাঁর জায়গায় সোমবার সন্ধেয় কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার উদ্বোধন করলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তা নিয়েই যাবতীয় জল্পনা ছড়াল মেলা চত্বরে। সেইসঙ্গে বিরোধও তীব্র আকার নিল দলের অন্দরে।
দলেরই একটি অংশের অভিযোগ, পুরসভা আয়োজিত মেলার উদ্বোধনে স্থানীয় বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথকে ডাকাই হয়নি। তাঁর অনুগামীদের অভিযোগ, শিলিগুড়ি থেকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতমকে নিয়ে এসে সাংস্কৃতিক মঞ্চের উদ্বোধন করানো হয়েছে। সেখানে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি জেলার মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথকে। পরে অবশ্য রবীন্দ্রনাথকে মদনমোহন মন্দিরে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের অনুষ্ঠানে দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাননি। এ ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ বলেন, “শিলিগুড়িতে দফতরের কাজে ছিলাম। সেখান থেকে ফিরতে অনেকটা দেরি হয়েছে। দেবোত্তরের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি।” এর বাইরে অবশ্য তিনি কিছু বলতে চাননি। কিন্তু তাঁর অনুগামীদের দাবি, গুরুত্ব না পাওয়ায় তিনি ওই অনুষ্ঠান এড়িয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে, মন্ত্রী গৌতম বিষয়টি নিয়ে কিছু ভাঙতে চাননি। এ দিন তিনি শুধু বলেন, “এর আগেও রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। এবারেও আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। আমন্ত্রিত হিসেবেই এসেছি। এর বাইরে অন্য কোনও বিষয় আমার জানা নেই।” এ দিন রাতে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের অনুষ্ঠানে দুই মন্ত্রীর দেখাও হয়ে যায়। তাঁরা পরস্পরকে সৌজন্যও বিনিময় করেন।
তবে রবীন্দ্রনাথকে না ডাকার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ কোচবিহার পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে নাম রয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীর। পুরসভার চেয়ারম্যান ভুষণ সিংহ বলেন, “সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে অন্য কোনও বিষয় নেই।”
দু’টি ভাগে কোচবিহারে রাস উৎসবের সূচনা হয়। মদনমোহন মন্দিরে ধর্মীয় রীতি মেনে উৎসবের সূচনা করেন কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ন। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। মেলার আয়োজক কোচবিহার পুরসভা। দু’পক্ষই আলাদা ভাবে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে। এবছর পুরসভার অনুষ্ঠানে রাসমেলার দ্বারোদ্ঘাটনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় কোচবিহার রামকৃষ্ণ মঠের মহারাজ স্বামী বিজ্ঞেয়ানন্দকে। সাংস্কৃতিক মঞ্চের উদ্বোধনে নাম রাখা হয় মন্ত্রী গৌতমের। প্রধান অতিথি হিসেবে নাম রয়েছে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথের। দলীয় সূত্রের খবর, জেলা তৃণমূলের অন্দরে রবীন্দ্রনাথ-গোষ্ঠীর সঙ্গে ভিতরে ভিতরে তীব্র লড়াই রয়েছে তাঁর বিরোধীদের। রাজনৈতিক মহলে রবীন্দ্রনাথ-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়, তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, বিধায়ক উদয়ন গুহের নাম পরিচিত। সেই তালিকায় রয়েছেন কোচবিহারের পুরপ্রধান ভূষণ সিংহও। অভিযোগ, দলে রবীন্দ্রনাথকে কোণঠাসা করতেই গৌতমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ-বিরোধী গোষ্ঠীর অবশ্য দাবি, গৌতম ২০১৩ সালে মেলার উদ্বোধন করেছিলেন। ২০১৭ সালেও মেলার উদ্বোধনে ছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ অনুগামীদের পাল্টা দাবি, পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব থাকার সময় থেকেই মেলার উদ্বোধন করেন রবীন্দ্রনাথ। ২০১৭ সালে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গেই উদ্বোধনে ছিলেন গৌতম। এবারই রবীন্দ্রনাথকে প্রধান অতিথি করা হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy