Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পাহাড় জুড়ে ২৯শে ফের বন্‌ধের ডাক

যুব মোর্চার সদস্যদের দাবি, পাহাড় নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার চুপচাপ বসে আছে। প্রথমে পাহাড়বাসীকে আলাদা রাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়ে পরপর ভোটে জিতেছে।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৩৫
Share: Save:

বড়দিনের মরসুমে আবার অচল হচ্ছে পাহাড়। আগামী ২৯ ডিসেম্বর নাগরিকপঞ্জি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার পাহাড় বন্‌ধের ডাক দিল বিনয়পন্থী যুব মোর্চা। সোমবার দুপুরে যুব মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

যুব মোর্চার সদস্যদের দাবি, পাহাড় নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার চুপচাপ বসে আছে। প্রথমে পাহাড়বাসীকে আলাদা রাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়ে পরপর ভোটে জিতেছে। তার পরে ১১টি জনজাতিকে তফসিলি জনজাতির স্বীকৃতি দিতে গড়িমসি করছে। তার সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে সিএএ এবং এনআরসি-র ভয়। এই নিয়েও প্রথমে বিজেপি নেতৃত্ব অভয় দেন, গোর্খাদের কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু তার পরে অসমে দেখা গিয়েছে, লক্ষাধিক গোর্খার এনআরসি তালিকায় নেই। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামা ছাড়া তাই উপায় নেই। বন্‌ধ ডাকা ছাড়াও পূর্ব ঘোষণা মতো এ দিন থেকে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দফতর, ডাকঘর, আয়কর দফতর, দুরদর্শন, রেল স্টেশন, জিএসটি অফিসের মতো একাধিক জায়গায় তিন দিনের ধর্না কর্মসূচি শুরু করেছে মোর্চা।

যুব মোর্চার (বিনয়পন্থী) কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র অনীত খাতি বলেছেন, ‘‘গোর্খাদের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি চলছে। আমাদের পাহাড়ের আদি বাসিন্দার স্বীকৃতি দিতে হবে। সেই দাবির সঙ্গে এনআরসি এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে আমাদের ২৪ ঘণ্টার বন্‌ধ।’’

তিনি জানান, রবিবার ভোর ৬টা থেকে বন্‌ধ শুরু হবে। অ্যাম্বুল্যান্স, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার গাড়ি, পরীক্ষার গাড়ি, মৃত্যু বা বিয়ে সম্পর্কিত কোনও গাড়ি থাকলে তা বন্‌ধের আওতার বাইরে থাকবে।

যুব মোর্চার এই বন্‌ধের ডাকের পরে ফের প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি পাহাড় আবার অচল হতে চলেছে? ২০১৭ সালে এই বন্‌ধ রাজনীতিকে হাতিয়ার করে পাহাড়কে বিপর্যস্ত করে দিয়েছিলেন বিমল গুরুং। এখন এই প্রশ্নের জবাবে বিনয়পন্থী মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েক জন সদস্য বলেছেন, ‘‘বড়দিনের পর এবং নতুন বছরের দু’দিন আগে বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। তা ছাড়া ২৯ ডিসেম্বর, রবিবার ছুটির দিন, স্কুল-কলেজ, অফিস এমনিতেই বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র গাড়ি চলাচল এবং দোকানপাট একদিনের জন্য বন্ধ থাকলে পাহাড়বাসী বা পাহাড়ে থাকা পর্যটকদের খুব একটা অসুবিধা হবে না। যে দাবিকে সামনে রেখে বন্‌ধ হচ্ছে, তাতে আম-পাহাড়বাসীর সকলের সমর্থন থাকছে।’’

বন্‌ধ রাজনীতির ধাক্কা পাহাড়ে লাগছে সেই ২০১৪ সাল থেকেই। কখনও টানা ৮০ দিন তো কখনও টানা ১০৫ দিনের বন্‌ধ দেখেছে পাহাড়বাসী। পর্যটকদের প্রাণ হাতে করে রাতের অন্ধকারে পাহাড় ছাড়তে হয়েছে দু’বছর আগেও। বিনয় তামাংদের হাতে যখন জিটিএ-র ক্ষমতা এল, তখন তাঁরা জানিয়েছিলেন, এই ধরনের নেতিবাচক রাজনীতির উল্টো পথে হেঁটে তাঁরা উন্নয়ন করবেন। পাহাড়বাসীদের একটা অংশ বলছে, ‘‘বিমল গুরুংয়ের সঙ্গ ত্যাগ করে বিনয় তামাং, অনীত থাপারা পাহাড়কে স্বাভাবিক করেছিলেন। ঘোষণা করা হয়েছিল, পাহাড়ে বনধ হবে না। কিন্তু সেই রাজনীতির পথেই মনে হচ্ছে মোর্চা হাঁটছে।’’ তবে যুব মোর্চার মুখপাত্রের যুক্তি, ‘‘আমরা প্রতীকী কথাটি বলছি।’’

মোর্চার বন্‌ধকে কিন্তু স্বাগত জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা বিধায়ক অশোক ভট্টচার্য। তিনি বলেন, ‘‘গোর্খারা তো অস্তিত্বের জন্য লড়াই করবেনই। ঠিকই করছেন। তবে তৃণমূলের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে কী হবে, তা দেখা দরকার।’’ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দলের দার্জিলিঙের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘ওরা আলাদা দল। ওদের আন্দোলন নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy