শিলিগুড়ি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর মালতী রায়ের সঙ্গে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মালতীদেবী পর্যটন মন্ত্রীর মাল্লাগুড়ি এলাকার সরকারি দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আধ ঘন্টা একান্তে কথা বলেন। গৌতমবাবু তো বটেই, মালতীদেবীও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করলেও দুই দলের অন্দরেই বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।
বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের বিরোধী বিজেপি কাউন্সিলর মালতীদেবী তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন কি, সেই প্রশ্নই ওঠা শুরু হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, গৌতমবাবু মন্ত্রী ছাড়াও তৃণমূলের সমতলের জেলা সভাপতি। সম্প্রতি ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর দুর্গা সিংহও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এতে তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ জন।
পর্যটন মন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা কোনও রাজনৈতিক সাক্ষাৎ নয়। উনি ওয়ার্ডের কিছু উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের কথা বলতে এসেছিলেন। আর বিরোধী দলের কাউন্সিলর রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। এতে জল্পনার কিছু নেই। পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে আমি বিভিন্ন মহলে কথা বলছি। দ্রুত একটি শ্বেতপত্রও প্রকাশ হবে।’’
আর মালতীদেবীর কথায়, ‘‘গৌতমবাবু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী থাকাকালীন ওঁর সঙ্গে ওয়ার্ডের কাজকর্ম নিয়ে কথা বলেছিল। সেই সময় উনি এসজেডিএ থেকে কাজ করানো সম্ভব কি না, দেখবেন বলেছিলেন। তাই ওঁর সময় নিয়ে দেখা করতে এসেছিলাম। দল যোগদানের তো বিষয় নেই।’’
বিজেপি কাউন্সিলর জানান, তাঁর ১ নম্বর ওয়ার্ড হিলকার্ট রোডের পাশের বিরাট এলাকায়। বস্তি রয়েছে। নানা উন্নয়নের কাজ করতে হয়। কিন্তু বাম পরিচালিত পুরসভা থেকে ঠিকঠাক কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কাছে আমি গিয়েছি। আমাদের নিজেদের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে বলেছি। এবার রাজ্যের মন্ত্রীকে বললাম। মানুষের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে রাজনীতির কিছু নেই। তাই দলের নেতাদেরও কিছু জানাইনি।’’
৪৭টি ওয়ার্ডের পুরসভার বিজেপির দু’জন কাউন্সিলর আছেন, মালতীদেবী ছাড়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খুশবু মিত্তাল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা জানান, দুই কাউন্সিলরের মধ্যে ১ জন দল ছাড়লে তিনি দলবিরোধী আইনে পড়বেন না। তৃণমূল সেই হিসাব করেই এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তৃণমূলের জেলার নেতাদের একাংশের দাবি, পুরসভার বিভিন্ন দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আগামী দিনে কারও কারও দলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিনের দলীর কাউন্সিলরের সঙ্গে মন্ত্রীর সাক্ষাতের বিষয়টি শুনেছেন বিজেপি নেতারাও। দলের জেলার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘উন্নয়ন নিয়ে কাউন্সিলর মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। এতে জল্পনার কিছুই নেই।’’
এ দিন বৈঠকের আগে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের নিয়ে কালীপুজো, ছটপুজোর বৈঠক করেছেন মন্ত্রী। সেখানে শব্দবাজি ও মাইকের নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থা, এনজেপির গাড়ি ভাড়া, পর্যটন স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের মাঝেই দমকলের এক অফিসারের সাম্প্রতিক এক সরকারি বৈঠকে এক মন্তব্যকে ঘিরে ক্ষোভও প্রকাশ করেন গৌতমবাবু। দমকলের কোনও অফিসার কত দিন এক জায়গায় আছেন, তা লিখে নেন। মন্ত্রী জানান, দুর্গা পুজোর মতো কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, ছটপুজো যাতে নির্বিঘ্নে কাটে সেই নির্দেশ বৈঠকে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy